সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ১১:২৮ অপরাহ্ন

টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা

স্পোর্টস ডেস্ক / ১৮৯ Time View
Update : সোমবার, ১৫ জুলাই, ২০২৪

আনহেল ডি মারিয়ার বিদায়ী ম্যাচ। জয়টা তাকেই উৎসর্গ করতে চেয়েছিল আর্জেন্টিনা। বাধ সাধে কলম্বিয়া। শরীরী ফুটবলে আর্জেন্টাইন ফুটবলারদের দমিয়ে রাখে তারা। তাদের শরীরী ফুটবলের শিকার হয়ে ৬৩ মিনিটে চোটে পড়ে মাঠ ছাড়তে হয় লিওনেল মেসিকে। মাঠ ছাড়ার সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন আর্জেন্টাইন মহাতারকা। চোখে মুখে হতাশা। যেন শেষ বেলায় সব হারাতে হচ্ছে তাকে। তখনও যে গোলের দেখা পায়নি আর্জেন্টিনা। এ সময় গ্যালারিতে আসা আর্জেন্টাইন সমর্থকরা দাঁড়িয়ে মেসিকে সম্মান জানিয়েছেন।

আর্জেন্টিনার যখন কিছুতেই কাজ হচ্ছিল না। পথ খুঁজে দিতে পারছিলেন না কেউ, তখন আরও একবার তাদের শিরোপার কাছে পৌঁছে দিয়েছেন এমন একজন- যার নিজের পথই ছিল বেশ বন্ধুর। প্রথমার্ধ, নির্ধারিত সময়ের ইতি, অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধে শেষের পর এসেছে লাউতারোর ওই গোল।

কলম্বিয়াকে হারিয়ে কোপা আমেরিকা টুর্নামেন্ট জিতেছে আর্জেন্টিনা। এ নিয়ে টানা দ্বিতীয়বার কোপা আমেরিকা জিতল আর্জেন্টিনা এবং এর মাধ্যমে উরুগুয়েকে টপকে আর্জেন্টিনা মহাদেশীয় এ টুর্নামেন্ট সর্বোচ্চ ১৬ বার জিতল। যুক্তরাষ্ট্রের হার্ড রক স্টেডিয়ামে আজ সোমবারের ফাইনালে লিওনেল স্কালোনির দল জেতে ১-০ গোলে।

মিয়ামির হার্ডরক স্টেডিয়ামে সোমবার সকালে ফাইনাল মহারণ শুরুর আগেই ছড়ায় উত্তাপ। তবে সেটা স্টেডিয়াম গেটের বাইরে। টিকিটবিহীন দর্শকদের হাঙ্গামার কারণে ম্যাচ ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট দেরিতে শুরু হয়। বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও দেরিতে ৭টা ২০ মিনিটে খেলা শুরু হয়। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলায় হয়নি কোনো গোল। এতে অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় কোপা আমেরিকার ৪৮তম আসরের ফাইনাল।

কোপা আমেরিকার ফাইনালে আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা এসেছিলেন বদলি হিসেবে। সেই লাউতারো মার্টিনেজই ফাইনালে এনে দেন। দুর্দান্ত এক শটে ভাঙেন ডেডলক। ম্যাচের ১১১ মিনিটে লিড পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা। মাঝমাঠ থেকে থ্রু বল পাঠিয়েছিলেন জিওভানি লো সেলসো। বদলি নামা এই মিডফিল্ডারের সেই পাস খুঁজে নেয় লাউতারো মার্টিনেজকে। সেখান থেকে ঠাণ্ডা মাথার ফিনিশে বল জালে পাঠান লাউতারো মার্টিনেজ। চলতি আসরে এটি তার ৫ম গোল। লাউতারো মার্টিনেজের এই গোল ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দেয়। নিজেদের ইতিহাসের ১৬তম কোপা আমেরিকার শিরোপা নিশ্চিত করল আর্জেন্টিনা।
ম্যাচের প্রথম মিনিটেই সুযোগ পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। মন্টিয়েলের ক্রস থেকে পা ছোঁয়ালেও তা লক্ষ্যে রাখতে পারেননি আলভারেজ। ষষ্ঠ মিনিটে প্রথম আক্রমণে যায় কলম্বিয়া। লুইস ডিয়াজের গড়ানো শট ঠেকিয়ে দলকে রক্ষা করেন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। পরের মিনিটেই রদ্রিগেজের বাড়নো বলে করডোভা শট করলে তার বারের ঠিক পাশ দিয়ে চলে যায়। যার ফলে এবারও হতাশ হতে হয় কলম্বিয়াকে। ১৩তম মিনিটে আবারও আক্রমণে যায় কলম্বিয়া। এবার রদ্রিগেজের বাড়ানো বলে কুয়েস্টা হেড করলে তা সহজে তালুবন্দী করেন মার্টিনেজ। ৩৩তম মিনিটে দারুন এক শট করেন লারমা। তবে মার্টিনেজের হাতে লেগে বল মাঠের বাহিরে চলে যায়। বাকি সময়ে আর তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে না পারায় গোলশূণ্য বিরতিতে যেতে হয় দুইদলকে।

এরপর ম্যাচের ৪৮তম মিনিটে গোলের দারুণ সুযোগ পেয়েছিল মেসিরা। তবে, ডি-বক্সের ভেতর বল পেয়েও গোল করতে পারেননি ম্যাক অ্যালিস্টার। এর মিনিট দশেক পর আরও একটি সুযোগ পেয়েছিল আর্জেন্টিনা। তবে, এবার ডি মারিয়ার শট অসাধারণ দক্ষতায় ঠেকিয়ে দেন কলম্বিয়ার গোলরক্ষক। ম্যাচের ৬৫তম মিনিটে বড় ধাক্কা খায় আলবিসেলেস্তারা। চোট পেয়ে কেঁদে মাঠ ছাড়েন লিওনেল মেসি। এরপর আরও বেশ কিছু আক্রমণ করলেও গোলের মুখ দেখেনি কেউ। এরপর নির্ধারিত ৯০ মিনিটে গোলের দেখা পায়নি কেউ। যদিও কলম্বিয়া অনেক সুযোগ পেয়েছিল। সুযোগ পেয়েছিল আর্জেন্টিনাও। কিন্তু কেউই পায়নি জালের নাগাল। ফলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।

ম্যাচের ৯৫ মিনিটে দারুণ একটি গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল আর্জেন্টিনা। এ সময় রদ্রিগো ডি পল ডি বক্সের মধ্যে নিকোলাস গঞ্জালেসকে বল বাড়িয়ে দেন। তিনি বল পেয়েই দ্রুত শট নেন। কিন্তু কলম্বিয়ার গোলরক্ষক ভার্গাস দ্রুত বলের লাইনে এসে ঝাপিয়ে পড়ে তালুবন্দি করেন বল। ১০৮তম মিনিটে সুযোগ পেয়েছিল কলম্বিয়াও। তবে, লিসান্দ্রোর অসাধারন ডিফেন্ডিংয়ে নিশ্চিত গোল হজমের হাত থেকে রক্ষা পায় আর্জেন্টিনা। তবে, ম্যাচের সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্ত আসে ১১২ তম মিনিটে। লে সেলসোর বাড়ানো বলে দারুণ ফিনিশিং করেন মার্টিনেজ। এই গোলেই শিরোপা জয়ের আনন্দে ভাসেন আলবিলেস্তোরা।

সোনালী বার্তা/এমএইচ


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর