গণপরিবহন সংকটেও রাজধানীতে যানজট
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে গত এক সপ্তাহ ধরে চলমান নৈরাজ্য-সহিংসতা ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি ধীরে ধীরে শান্ত হয়ে আসছে। গত রোববার সরকারি চাকরির কোটা নিয়ে রায় দেন আপিল বিভাগ। রায়ের পরের দিন এ সম্পর্কিত প্রজ্ঞাপন বিষয়ে অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়লে গত ১৯ জুলাই রাত ১২টা থেকে সারাদেশে কারফিউ জারি করে সরকার। বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য মোতায়েন করা সেনাবাহিনী। একই সঙ্গে জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিতে গত রবি, সোম ও মঙ্গলবার (২১, ২২ ও ২৩ জুলাই) সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। তিন দিনের সাধারণ ছুটির পর আজ বুধবার শুরু হয়েছে অফিস আদালতের কার্যক্রম। এদিকে অফিস-আদালত খুলে দেওয়া হলেও সারাদেশে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার।
পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ধীরে ধীরে কারফিউ শিথিলের সময়সীমা বাড়ানো হয়। সবশেষ বুধবার ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী জেলায় কারফিউ জারি রয়েছে। তবে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এসব জেলায়ও কারফিউ শিথিল থাকবে। তাছাড়া এদিন বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত সব অফিস, ব্যাংক, আদালত চলবে।
আজ সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করায় রাজধানীতে চলতে শুরু করেছে গণপরিবহন। তবে সড়কে গণপরিবহন দেখা গেছে খুবই কম। এতে বিপাকে পড়েছেন অফিসগামীরা। অনেকেই বাধ্য হয়ে হেঁটে অফিসে পৌঁছেছেন। এ ছাড়া কোথাও কোথাও যানজট দেখা গেছে।
রাজধানীর মাতুয়াইল, রায়েরবাগ, শনির আখড়া, গুলিস্তান, জিরো পয়েন্টে সরেজমিনে দেখা যায়, টানা তিন দিনের ছুটির কারণে ঘর থেকে বের হয়েছেন বিপুলসংখ্যক মানুষ। ফলে সড়কে তৈরি হয়েছে ব্যাপক যানজট। একই সঙ্গে রাস্তায় দেখা গেছে গণপরিবহনের সংকট। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। এ অবস্থায় অনেককেই দেখা গেছে পায়ে হেঁটে চলাচল করতে।
রায়েরবাগ থেকে অফিসে যাওয়ার জন্য বের হন নাহিদ বিশ্বাস। তিনি বলেন, সড়কে গণপরিবহন খুবই কম। প্রাইভেট কার, অটোরিকশা, রিকশার পরিমাণ বেশি। বাসে যাত্রীর ব্যাপক চাপ থাকায় ওঠা সম্ভব হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে হেঁটে অফিসে যাচ্ছি।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডের (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি) সব কোটা বাতিল করা হয়। তবে ১৪তম থেকে ২০তম গ্রেডে (মূলত তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি) কোটা ছিল। যদিও প্রতিষ্ঠান ভেদে এসব পদের কোটায় কিছু ভিন্নতা আছে।
সোনালী বার্তা/এমএইচ