অলিম্পিক ইতিহাসের সেরা ছবিটাই উঠলো প্যারিসে
লম্বা সময় বন্ধ থাকার পর টোকিও অলিম্পিকে ফিরেছে সার্ফিং ইভেন্ট। সাগরের বুকে সার্ফিংবোর্ড নিয়ে ঢেউ সামাল দিতে নানা কসরত দেখাতে হয় সার্ফারদের। প্যারিস অলিম্পিকে সার্ফিং অবশ্য হচ্ছে মূল ভেন্যু প্যারিস থেকে ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটার দূরে তিহোপুতে। দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের ফ্রান্সের নিয়ন্ত্রাণাধীন তাহিতি অঞ্চলে চলছে সার্ফিংয়ের দক্ষযজ্ঞ।
তুলনামূলক কম আলোচিত এই ইভেন্টই গত দুদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আকারে সাড়া ফেলেছে। অলিম্পিক তো বটেই, ক্রীড়াজগতের সেরা ছবিটাই হয়ত উঠেছে সার্ফিং ইভেন্ট থেকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অন্তত সেই আলোচনাই চলছে গেল কয়েকদিন ধরে।
ছবিটা দেখে যাক এক নজরে। ব্রাজিলিয়ান সার্ফার গ্যাব্রিয়েল মেদিনা হাওয়ায় ভাসছেন। নিচে সাগরের উত্তাল ঢেউ। মেদিনার পায়ের সঙ্গে বাঁধা সার্ফিংবোর্ডটাও ভাসছে বাতাসে। আর মেদিনা তর্জনী উঁচিয়ে ধরেছেন। এমন ছবিটাকে হয়ত বাঁধাই করে রাখতে চাইবেন যে কেউই।
বার্তা সংস্থা এএফপির ফটোগ্রাফার জেরোমি ব্রুইলি তুলেছেন এমনই এক ছবি। তাহিপুতে গিয়েছিলেন ভালো ছবির আশায়। গ্যাব্রিয়েল মেদিনাকে চিনতেন আগে থেকেই। জানতেন সার্ফিং শেষে একটা দারুণ মুহূর্ত তৈরি করা মেদিনার অভ্যাস। ব্রুইলি অপেক্ষায় ছিলেন সেটার।
কিন্তু গ্যাব্রিয়েল মেদিনা সেদিন যা করেছেন, তা বেশ রোমাঞ্চকর। যে বিশাল ঢেউ সামাল দিয়েছেন তা রেকর্ড ভেঙেছে। নতুন অলিম্পিক রেকর্ড গড়ার পর নিজের অভ্যাসমতোই একটা মুহূর্ত তৈরি করেছেন মেদিনা। আর সেটাই ধরা পড়েছে ব্রুইলির ক্যামেরাতে।
পরে এএফপির এই ফটোগ্রাফার জানান, সব ফটোগ্রাফারই এটার অপেক্ষায় ছিলেন। আপনি গ্যাব্রিয়েল মেদিনাকে চেনেন। বিশেষ করে তিহোপুতে সে বেরিয়ে আসবে আর একটা কিছু করে বসবে। আপনি জানেন, একটা কিছু হবে। কিন্তু মূল ব্যাপার হচ্ছে, সেটা হবে কখন? কারণ আমরা কেউই তা জানি না।
ফটোগ্রাফার জেরোমি ব্রুইলি পুরো ঘটনার ব্যাখ্যায় বললেন, আমার ধারণা সে (মেদিনা) যখন টিউবের (ঢেউয়ের ভেতরের অংশ) ভেতর ছিল, তখনই জানতো আজকের দিনের অন্যতম বড় ঢেউ ছিল সেটা। সে ঢেউ থেকে যেভাবে বেরিয়ে এলো, বলতেই হবে পুরো মার্কস পাওয়ার যোগ্য।
ব্রুইলি সেদিন তিহোপুতে মেদিনার ৮টিই ছবি তুলেছিলেন। ৪টি পানির ভেতরে আর ৪টি পানির বাইরে তোলা। আর সেখান থেকে একটি ছিল আলোচিত এই ছবি। প্রকাশ্যে এনেছিলেন মেদিনা নিজেই। এক রাতের মধ্যে ইন্সটাগ্রাম আর ফেসবুকে ভাইরাল হয় সেই ছবিটা। বাকি গল্পটা জানা অনেকেরই। অলিম্পিকে তুলনামূলক পিছিয়ে থাকা এক ইভেন্ট থেকে পাওয়া গেল ক্রীড়াজগতের সর্বকালের অন্যতম সেরা এক ছবি।
সোনালী বার্তা/এমএইচ