রাজশাহী সড়ক পরিবহন দখল নিতে বিএনপির দুগ্রুপের সংঘর্ষ
রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের আধিপত্ত বিস্তার ও কার্যালয় দখল কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষের সময় ভবনে ভাংচুর ও মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়। এ সময় সংবাদ সংগ্রহের দায়িত্বে থাকা সাংবাদিকদের লাঞ্ছিত করে ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে রাজশাহী শিরোইল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল সংলগ্ন রাজশাহী পরিবহন ও মালিক গ্রুপের ভবনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের ঘটনায় কয়েকজন আহত হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সংঘর্ষের ঘটনার ভিডিও ধারণ করায় বাংলাভিশনের ক্যামেরা ভাঙচুর ও তিন সংবাদকর্মীকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদ এত দিন আওয়ামীপন্থীদের দখলে ছিল। সরকার পতনের পর এই সমিতিতে বিএনপিপন্থীরা আসা শুরু করেন। তাদের মধ্যে দুটি গ্রুপ এটি দখলে নিতে নেমেছে। সম্প্রতি এই সমিতির সভাপতি নাজিমউদ্দীন কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করলে সমিতির সদস্য বিএনপিপন্থী গৌতম মৌহন চৌধুরী রাকেশ নিজেকে আহ্বায়ক ঘোষণা করেন।
অপর দিকে, নজরুল ইসলাম হেলাল নামের আরেকজন বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক মতিউল হকের কাছ থেকে দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার দাবি জানিয়ে কার্যালয় দখল নিতে যান। গৌতম মৌহনের গ্রুপটি শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে কার্যালয়ে ছিল। অপর দিকে নজরুল ইসলাম বিকেলের দিকে কার্যালয় দখলে যান। এতে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষের সময় কার্যালয়ের সামনে থাকা একটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
এ সময় বাংলাভিশন টেলিভিশনের ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয়েছে। লাঞ্ছিত করা হয় বাংলাভিশনের ক্যামেরাম্যান জসীমউদ্দীন, বাংলার সকাল পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বনি ও সরকার নিবন্ধিত পদ্মাটাইমস অনলাইনের ক্যামেরাপার্সন সাজ্জাদ মৃধাকে। পরে শিক্ষার্থী ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
নজরুল ইসলাম বলেন, তিনি বিএনপি সরকারের সময় যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকার এলে তারা বাধ্য হয়ে ছেড়ে দিয়ে চলে যান। সরকারের পতনের পর আওয়ামীপন্থী সাধারণ সম্পাদকের কাছ থেকে দায়িত্ব বুঝে নিয়েছি। কিন্তু গৌতম নিজেকে আহ্বায়ক হিসেবে দাবি করে কার্যালয় দখল করে নেয়। কার্যালয়ের ভেতর থেকেই তাদেরকে আগে হামলা করে। তাদের আঘাতেই টেলিভিশনের ক্যামেরা ভেঙেছে।
এ ব্যাপারে গৌতম মৌহনকে ফোন করা হলে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে বাংলাভিশনের ক্যামেরা পারসন জসিম উদ্দিন জানান, তিনি দায়িত্ব পালন করতে গিয়েছিলেন। কার্যালয়ের নিচে থাকা পক্ষটি তাঁর ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে আছাড় মেরে ভেঙে ফেলেছে। তাদের হাতে দেশীয় অস্ত্র ছিল।
বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক বলেন, ‘সরকারের পদত্যাগের পর থেকেই বিএনপিপন্থীরা অস্ত্র নিয়ে কার্যালয় দখল করতে আসে। আমাদের জীবনের মায়া আছে। সেই জায়গা থেকে তারা জোর করে দায়িত্ব নিয়েছে। কিন্তু এভাবে দায়িত্ব নেওয়া যায় না। পরে শুনলাম কার্যালয় দখল নিয়ে দুই পক্ষের মারামারি হয়েছে।
রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এরশাদ আলী বলেন, এসব দখল খারাপ চর্চা। বিএনপির সময়ে নির্বাচিত ছিলেন নজরুল ইসলাম। তারা তখন দায়িত্ব শেষ করতে পারেননি। সে অনুযায়ী তিনিই দায়িত্ব পাবেন। কিন্তু এটা নিয়ে দখল হামলা সংঘর্ষ কেন হবে।
সোনালী বার্তা/এমএইচ