সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:১১ পূর্বাহ্ন

প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্রে অচলাবস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক / ২৯ Time View
Update : শনিবার, ১৭ আগস্ট, ২০২৪

সচিবালয়ের বঞ্চিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আজকের মধ্যে পদোন্নতি না দিলে কাল থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির আলটিমেটাম দিয়েছেন। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ কোনো সচিবকে সচিবালয়ে ঢুকতে দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে চেকপোস্ট স্থাপন করা হবে। তাদের দাবি, দেশের সব বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি ও এসপিকে বরখাস্ত করতে হবে। যারা ‘সিভিল-ক্যুর চেষ্টা করেছে’ তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করে আইনের আওতায় আনতে হবে। এছাড়া আলী ইমাম মজুমদারকে উপদেষ্টা হিসাবে মানেন না বলেও জানান বঞ্চিত এই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সভায় মো. আব্দুস সাত্তার বলেন, শনিবারের (আজ) মধ্যে বঞ্চিত সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর (ক্যাডার নন-ক্যাডার) পদোন্নতি দিতে হবে। অন্যথায় বঞ্চিতরা রোববার (কাল) সকাল থেকে সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে। বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ বিগত সরকারের আমলের কোনো সচিব রোববার থেকে সচিবালয়ে আসতে এবং চেয়ারে বসতে পারবে না। মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সচিবদের প্রবেশ ঠেকাতে প্রয়োজনে সচিবালয়ের গেটে চেকপোস্ট বসানো হবে। এছাড়া দেশের সব বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি ও এসপিকে বরখাস্ত করতে হবে।

আব্দুস সাত্তার আরও বলেন, আলী ইমাম মজুমদারকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপদেষ্টা হিসাবে মানেন না। তিনি বিতর্কিত ব্যক্তি। সুতরাং তাকে কর্মচারীরা উপদেষ্টা হিসাবে দেখতে চান না। তিনি বলেন, আমরা শুনলাম আলী ইমাম মজুমদার বঞ্চিতদের পদোন্নতি দিতে গিয়ে আইন-কানুন খুঁজে পাচ্ছেন না। আমরা বিনয়ের সঙ্গে জানতে চাই, বিগত ১৭ বছর আমাদের কোন আইনে বঞ্চিত করা হয়েছে? বঞ্চিত করতে যদি আইন না লাগে তাহলে পদোন্নতি দিতে আইন লাগবে কেন?

তিনি বলেন, বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার সাবিরুল ইসলাম, ঢাকার ডিসি আনিসুর রহমানসহ যারা সিভিল-ক্যু করতে চেয়েছে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় আনতে হবে।

জাকির হোসেন কামাল বলেন, আমরা ক্ষুধার্ত, বিগত ১৭ বছর আমরা না খেয়ে ছিলাম। আমরা কোনো আইন-কানুন নিয়ম-নীতি মানি না। যে কর্মকর্তাকে যে পদ থেকে সুপারসিটেড হয়েছে তাকে সেখান থেকেই পদোন্নতি দিতে হবে। তিনি বলেন, ১৭ বছর অফিসার্স ক্লাবে আমাদের কোনো প্রবেশাধিকার ছিল না। এখন ক্লাব চলবে আমাদের কথায়। কমিটি ভেঙে এডহক কমিটি করে দেওয়া হবে। এডহক কমিটি ক্লাব পরিচালনা করবে।

আয়কর ক্যাডার কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, টাকা পাচারকারীদের সব তথ্য এনবিআর-এ আছে। সে তথ্য সংগ্রহ করে তা জাতির সামনে প্রকাশের দাবি জানিয়ে সাজ্জাদ হোসেন বলেন, তাহলে জাতি জানতে পারবে কে বা কারা দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে দেশকে দেউলিয়া করে দিয়েছে।

বঞ্চিত পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুল হক বলেন, আমাদের ওএসডি করে রাখা হয়েছে। পাঁচজন পুলিশ কর্মকর্তাকে কোনো মামলা ছাড়াই পাঁচ বছর জেলে আটক রাখা হয়েছে। আমরা এসব জুলুমের বিচার চাই।

শুক্রবার বিকালে অফিসার্স ক্লাবের হলরুমে গত ১৭ বছর ধরে পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এক মতবিনিময় সভায় এই আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব (পিএস) মো. আব্দুস সাত্তার। সভায় বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে ১৯৮২ ব্যাচের কর্মকর্তা মো. আবদুল বারী, এ কে এম জাহাঙ্গীর, ৮৪ ব্যাচের পুলিশ ক্যাডারের মাহফুজুল হক, প্রশাসন ক্যাডারের ৮৫ ব্যাচের আব্দুল খালেক, জাকির হোসেন কামাল, কামরুজ্জামান চৌধুরী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এপিএস সুরাতুজ্জামান, রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীর পিএস জিয়াউল হাসান মুন্না ও বিসিএস দশম ব্যাচের আয়কর ক্যাডারের কর্মকর্তা সালাউদ্দিন নাগরি বক্তৃতা করেন। এ সময় বিসিএস প্রশাসন ৮২ (বিশেষ) ব্যাচের কর্মকর্তা মুন্সি আলাউদ্দিন আল আজাদ, ৮৫ ব্যাচের কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান, বাংলাদেশ অ্যাডমিনিসট্রেটিভ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক উপ-সচিব মাহবুবুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সোনালী বার্তা/এমএইচ


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর