গাজী টায়ারসে আগুন: নিখোঁজের তালিকায় ১৩৭ জন
সোমবার (২৬ আগস্ট) বিকেল ৩টা পর্যন্ত ১৩৭ জন নিখোঁজের তালিকায় করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (ঢাকা) লে. কর্নেল রেজাউল করিম।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, স্বজনরা দাবি করছেন, যে তাদের পরিবারের সদস্যরা নিখোঁজ রয়েছেন, যারা রোববার রাতে লুটপাটের সময় এই কারখানায় যান। তাদের একটি খসড়া তালিকা করা হয়েছে। এ মুহূর্তে তা যাচাই-বাছাইয়ের কোনো সুযোগ নেই। স্বজনরা যারা দাবি করছেন তাদের নাম, ঠিকানা লিখে রাখা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ১৩৭ জনের তালিকা পাওয়া গেছে।
রোববার (২৫ আগস্ট) রাত থেকে রূপগঞ্জের গাজী টায়ার কারখানার আগুন জ্বলছে। ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট এখন পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয়দের দাবি, ভবনটিতে ৪০০ থেকে ৫০০ মানুষ আটকা পড়েছেন। তারা জীবিত আছেন কিনা সে বিষয়ে কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না।
জানা যায়, রোববার রাত সাড়ে ১০টায় রূপগঞ্জ উপজেলার রূপসী এলাকায় স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীর মালিকানাধীন গাজী টায়ার কারখানার ছয় তলা ভবনে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এরপর থেকে শত শত মানুষ এসে সেখানে জড়ো হন।
স্থানীয়রা জানান, রোববার (২৫ আগস্ট) বিকেলে কারখানার মালিক নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীকে নারায়ণগঞ্জের আদালত ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর পরপর রূপগঞ্জের রূপসী এলাকায় আনন্দ মিছিল বের করে বিএনপি ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এসময় শত শত মানুষ গাজী টায়ার কারখানার ভেতরে প্রবেশ করে মেশিনপত্র ও আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন সামগ্রী লুটপাট করে নিয়ে যেতে শুরু করে। এক পর্যায়ে লুটপাট চলতে থাকলে প্রায় ৫ শতাধিক মানুষ ছয় তলা ভবনটির বিভিন্ন ফ্লোরে উঠে পড়েন। সেখান থেকেও লুটপাট শুরু হয়। রাত নয়টার দিকে ভবনের নিচতলায় দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দিলে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এসময় দুই তলা ও তিন তলার জানালা দিয়ে অনেকেই নিচে লাফিয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে আগুন একে একে পুরো ছয় তলা পর্যন্ত ছড়িয়ে গেলে ভেতরে আটকে পড়া অনেকেই আর বের হতে পারেন নি বলে এলাকাবাসী দাবি করছেন।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (প্রশিক্ষক) লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেজাউল করিম সময় সংবাদকে বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে আমাদের বিভিন্ন স্টেশনের ১২টি ইউনিট কাজ করছে। আমরা টিটিএল মেশিন দিয়ে ওপর থেকে পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছি। ছয় তলা ভবনটির অধিকাংশ ফ্লোরে প্লাস্টিক, রাবার ও কেমিকেলসহ বিভিন্ন ধরনের দাহ্য পদার্থ মজুদ ছিল। যে কারণে এগুলো জ্বলে শেষ না হওয়া পর্যন্ত নেভানো খুবই দুঃসাধ্য ব্যাপার। তারপরও আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বিভিন্নভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, আমরা ভবনের ভেতর থেকে আহত ১৪ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেছি। তবে ভেতরে কি পরিমাণ মানুষ আটকা পড়েছিলেন সেটি এখন বলা সম্ভব হচ্ছে না।
সোনালী বার্তা/এমএইচ