মাদারীপুরে মানবপাচার চক্রের সদস্যদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ
মাদারীপুরে মানবপাচারচক্রের সক্রিয় সদস্যদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে ভুক্তভোগী অর্ধশত পরিবার। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে ঘণ্টাব্যাপী এই কর্মসূচি পালন করা হয়। ব্যানার-ফ্যাস্টুন হাতে এ সময় বক্তারা মানবপাচারচক্রের সক্রিয় সদস্য দোলেয়ার সরদার ও এমদাদ ফকিরের বিচার দাবি করেন।
ভুক্তভোগীরা জানায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামের দেলোয়ার সরদার ও এমদাদ ফকির দীর্ঘদিন ধরে এলাকার সহজসরল যুবকদের ইতালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে নেয়ার প্রলোভন দেখায়। এই প্রলোভনে পড়ে অর্ধশত যুবকের পরিবার লাখ লাখ টাকা তুলে দেয় ওই দুই দালালদের হাতে। পরে ইতালির উদ্দেশ্যে যুবকরা যাত্রা করলে মাঝপথে লিবিয়ায় তাদের বন্দি করে দালালচক্র। এরপর মাফিয়াদের কাছে বিক্রি করে পরিবারের কাছে থেকে আদায় করা হয় মুক্তিপণের লাখ লাখ টাকা। তবুও মিলছে না বন্দি যুবকদের মুক্তি। এ ব্যাপারে একাধিক মামলা হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে দালালচক্র। শুধু দেলোয়ার সরদার ও এমদাদ ফকির নয়, তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে এলাকার অনেকেই। হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা।
মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন স্বজনরা। পরে জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দেন ভুক্তভোগীদের পরিবার।
এ সময় প্রশাসনের মাধ্যমে আটক যুবকদের মুক্তি ও দালালদের কঠোর শাস্তি দাবি করেন তারা। এ ব্যাপারে আইনগত সহযোগিতার আশ্বাস দেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
অভিযুক্ত দালালরা হলেন- সদর উপজেলার বালিয়া গ্রামের রশিদ সরদারের ছেলে দেলোয়ার সরদার, মজিব ফকিরের ছেলে এমদাদ ফকির, রহিম ফকিরের ছেলে হাবিব ফকির, দেলোয়ার সরদারের স্ত্রী আরজু বেগম, রতন বয়াতীর স্ত্রী হোসনে আরা বেগম। এছাড়াও আরও অনেকে এই ঘটনায় জড়িত রয়েছে।
ভুক্তভোগী যুবকরা হলেন- একই গ্রামের কামাল খানের ছেলে সুমন খান, গোলাম ফারুক খানের ছেলে শাহ আলম খান, জামিল হোসেনের ছেলে জোবায়ের হোসেন, মোস্তফা মৃধার ছেলে শাহীন মৃধা, দুলাল মোল্লার ছেলে আরমান মোল্লা, সামচু সরদারের ছেলে হৃদয় সরদারসহ অর্ধশত যুবক। তাদের বয়স ১৮-২৪ বছর।
এ ব্যাপারে মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান বলেন, মানবপাচারচক্রের সদস্যদের ধরতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে বলা হয়েছে। এছাড়া অবৈধভাবে কোন যুবক যেন, বিদেশে পাড়ি না জমান সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতেও বলা হয়েছে।
সোনালী বার্তা/এমএইচ