ভোলায় আখের বাম্পার ফলন চাহিদাও প্রচুর খুশি কৃষক
ভোলার তজুমদ্দিনে চলতি বছরে আখ চাষে সাফল্য পাচ্ছে চাষীরা। একদিকে যেমন ভালো ফলন হয়েছে ঠিক তেমনি দ্বিগুণ দাম পেয়ে খুশি কৃষকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেলে ও দোআঁশ মাটি আখ চাষের জন্য সবচেয়ে বেশি উপযোগী। মুলত ভাদ্র-আশ্বিন মাসে আখের চাঁড়া রোপণ শুরু হয়। রোপণের পর থেকে
৮ থেকে ৯ মাসের মধ্যে আখের ফলন পাওয়া যায়। আখ উঁচু ও নিচু জমিতেও চাষ করা যায়। আবহাওয়া ও মাটির গুণাগুণের কারণে আশানুরূপ ফলন ও বাজারে বেশ চাহিদা থাকায় দিন দিন কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখে যায়,চাঁচড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড দিঘলাকান্দি চাঁদপুর ইউনিয়ন কেয়ামুল্যাহ এলাকায় কৃষকরা ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন আখ কাটতে। এখান থেকে আখ স্থানীয় বাজারসহ বিভিন্ন জেলার পাইকাররা এসে নিয়ে যান।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, তজুমদ্দিন উপজেলায় এ বছর ৩০ হেক্টর জমিতে আখ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্জন হয়েছে ৩২ হেক্টর, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ হেক্টর জমিতে আখ চাষ বেশি হয়েছে। যারা আখ চাষ করেছেন, তাদের সাথী ফসল হিসেবে অন্য ফসল রোপণেরও পরামর্শ দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তবে আখ চাষে বেশি ঝুঁকছে কৃষকরা এতে তারা লাভবানও হচ্ছেন।
দিঘলাকান্দি গ্রামের আখ চাষি মো. জাহাঙ্গীর (সংবাদ সকাল) কে বলেন, ২০ বছর ধরে নিয়মিত আখ চাষ করছি। এ বছর ৪০ শতাংশ জমিতে গেন্ডারি ও নলি জাতের আখ চাষ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। বাজারে অন্তত ১ লক্ষ টাকারও বেশি আখ বিক্রি করতে পারবো।
একই এলাকার কৃষক মো.মতিন মিয়া বলেন, চলতি বছর ৩২ শতাংশ জমিতে আখ চাষ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। আখ চাষের উপযোগী বেলে দোআঁশ ও পলি দো-আঁশ মাটি। ৩২ শতাংশ জমিতে খরচ হয়েছে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। আখ চাষে খরচ কম কিন্তু পরিশ্রম একটু বেশি করতে হয়। এখানকার আখ খুব মিষ্টি ও সুস্বাদু। আখ বিক্রি করতে আমাদের কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় না।
কৃষক মো. কামাল বলেন, আমি ২৪ শতাংশ জমিতে চাষ করছি। লাভ ভালো হওয়ায় আগামীতে বেশি করে আখ চাষ করবো। সময়মতো ওষুধ দিতে না পারলে পচন রোগ বাড়ে। তবে কম খরচে বেশি লাভ করা যায় এ ফসলটি থেকে। লাভ পেতে হলে অবশ্যই ঠিকমতো আখের পরিচর্যা করতে হবে। আমাদের জমি থেকে ব্যবসায়ীরা আখ কিনে নিয়ে যান। আখ বেচতে কোনো ঝামেলা পোহাতে হয় না। চাঁদপুর ইউনিয়নের আখ চাষি মো. মফিজ বলেন, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সার্বিক সহযোগিতায় প্রথমবার অল্প পরিসরে আখের চারা রোপণ করি। আমার খেতে আখের বাম্পার ফলন হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাজমুল হুদা( দৈনিক সোনালী বার্তা) কে বলেন, এবার আখের মৌসুমে এ উপজেলা ৩০ হেক্টর জমিতে আখের আবাদ টার্গেট ধরা হলেও লক্ষ মাত্রার চেয়ে আরও ২ হেক্টর জমিতে আখের চাষ বেশি হয়েছে। চাঁচড়া ও চাঁদপুর ইউনিয়নে আখের চাষ বেশি হয়। অনেক কৃষক বেশি লাভের আশায় গেন্ডারি জাতের আখ চাষ করেছেন। আখ চাষে তেমন একটা সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয় না। অল্প পরিশ্রম ও খরচে আখ চাষে লাভবান হওয়া যায়। এছাড়াও আখের সাথে সাথী ফসল হিসেবে অন্যান্য ফসলও চাষ করা যায়।
সোনালী বার্তা/এমএইচ