শার্শায় হাফেজ বাপ্পির মৃত্যুর ঘটনায় সঠিক তদন্তের দাবী এলাকাবাসীর
যশোরের শার্শায় পারিবারিক কলহে গুরুতর আহত হয়ে ঢাকায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঘটনার ৩ দিন পর হাফেজ বিনিয়ামিন বাপ্পি (২৬) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
এ ঘটনায় নিহত হাফেজ বাপ্পির স্ত্রী আমেনা খাতুন বাদী হয়ে শার্শা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। যার মামলা নং ১২, তাং ১৬/০৯/২৪। ধারা ৩০২। পুলিশ এ ঘটনার সাথে জড়িত বাপ্পির পিতা সফিকুল ইসলাম চান্দু (৫৫) কে আটক দেখিয়েছে। এ লোমহর্ষক ঘটনাটি ঘটেছে শার্শা উপজেলার কাঠুরিয়া গ্রামে।
জানা গেছে, গত ১৩ সেপ্টেম্বর শুক্রুবার দুপুর ২ টার পর ৫ শত টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে পারিবারিক কলহের জেরে পিতা-মাতা, ছোট ভাই ও চাচা মিলে হাফেজ বাপ্পিকে বেদম ভাবে মারপিট করে। এ সময় বাপ্পির মা পাশে থাকা কুড়াল দিয়ে বাপ্পির মাথার পেছনের অংশে ঘাড়ের উপরে ৮ থেকে ১০ টি কোপ মারে। এ সময় স্থানীয়রা বাপ্পিকে উদ্ধার করে প্রথমে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে জরুরী বিভাগের ডাক্তার অবস্থার অবনতি দেখে তাকে যশোর ২৫০ শয্যা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। এরপর যশোর ২৫০ শয্যা মডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকেও বাপ্পিকে ঢাকায় রেফার্ড করে। হাফেজ বাপ্পির স্বজনেরা তাৎক্ষনিক ঢাকায় নিয়ে বাপ্পিকে ইউনিভার্সাল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে ৩ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৬ সেপ্টেম্বর বেলা ১২ টার সময় বাপ্পি মারা যায়। এলাকাবাসী জানান, ঢাকা থেকে এ্যাম্বুলেন্স করে হাফেজ বাপ্পির মরদেহ কাঠুরিয়া গ্রাামের নিজ বাড়িতে নিয়ে এসে বাপ্পির এক আত্মীয় ও এলাকার একজন ইউপি সদস্য তড়িঘড়ি করে দাফনের প্রস্তুুতি নিলে এলাকার লোকজন ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশকে ঘটনাটি জানালে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। এ সময় শার্শা থানার পুলিশ নিহত বাপ্পির পিতা সফিকুল ইসলাম চান্দু ও ঘাতক মা সুফিয়া খাতুনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। তখন নিহত বাপ্পির ছোট ভাই রাব্বি ও তার চাচা ভুট্রো পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে আরও জানা গেছে, উলাশীর এক আত্মীয় নেতা ও এক ইউপি সদস্য ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার জন্য শার্শা থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে হাফেজ বাপ্পি হত্যার মুল আসামী বাপ্পির মা সুফিয়া খাতুন, ছোট ভাই রাব্বি (২৪) ও চাচা ভট্রো হোসেন এর নাম বাদ দিয়ে শুধু মাত্র বাপ্পির পিতা সফিকুল ইসলাম চান্দুকে আসামী করেছে। যেটা গ্রামের সাধারন মানুষ মেনে নিতে পারছে না। পুলিশ ঘটনা স্থল থেকে তদন্ত করে বাপ্পির পিতা ও মাকে আটকের পর কিসের বিনিময়ে এমন সাজানো মামলা করলো যা সাধারন জনমনে প্রশ্নবিদ্ধ।
নিহত বাপ্পির শ্বশুর জাহিদুল ইসলাম জানান, গত ২ মাস আগে তার মেয়ে তার বাড়িতে চলে যায়। এরপর বাপ্পি হত্যার পর তাদেরকে খবর দিয়ে নগদ ৮০ হাজার টাকা ও ১০ কাঠা জমির বিনিময়ে তাদের সাথে মামলা না করতে আপোষ করে। তিনি আরও বলেন আমার মেয়ে আমেনা খাতুন বাদী হয়ে শ্বশুর শাশুড়ি ও দেবরের নামে মামলা দিয়েছে। এরপরে পুলিশ কিভাবে শ্বাশুড়ি ও দেবরের নাম বাদ দিয়ে মামলা রুজু করেছে।
আমি পুলিশের উদ্ধর্তন কতৃপক্ষের কাছে ঘটনাটি পিবিআই পুলিশ দিয়ে সঠিক তদন্ত করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য দাবী জানাচ্ছি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান জানান, একজনকে আসামী করে মামলা হয়েছে।
এ বিষয়ে নাভারণ সার্কেলের এএস’পি নিশাত আল নাহিয়ান জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য যশোর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও মূল ঘটনা তদন্তের জন্য নিহতের পিতা-মাতাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
সোনালী বার্তা/এমএইচ