মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:২৬ পূর্বাহ্ন

পার্বত্য অঞ্চল পরিদর্শনে ৩ উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক / ৩০ Time View
Update : শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে উদ্ভূত পরিস্থিতি পরিদর্শন করতে গেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তিন উপদেষ্টা।

শনিবার সকাল ১০টায় তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে তারা সেখানে বেলা ১১টায় পৌঁছান।

তিন উপদেষ্টা হচ্ছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.), পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত উপদেষ্টা সাবেক রাষ্ট্রদূত (অব.) সুপ্রদীপ চাকমা, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় উপদেষ্টা এ. এফ. হাসান আরিফ। পরিদর্শনে উদ্ভূত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও স্থানীয়দের সঙ্গে মতবিনিময় করার কথা রয়েছে।

জানা গেছে, বেলা সোয়া ১১টায় রাঙ্গামাটির রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মতবিনিময়। বিকেল ৩টায় খাগড়াছড়ির রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মতবিনিময় করবেন।

এদিকে শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে শহরের জিমনেশিয়াম চত্বর থেকে কয়েক হাজার পাহাড়ির একটি মিছিল বের হয়ে বনরূপায় গেলে সেখানে মিছিলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়েছে এমন অভিযোগ করে বাঙালিদের বেশকিছু দোকানপাট ভাঙচুর করে মিছিলকারীরা। তারা এ সময় রাস্তায় চলাচলকারী বাস-ট্রাক ভাঙচুর করে। এরপরই লাঠিসোঁটা হাতে মাঠে নেমে পড়ে বাঙালিরাও। আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয় বনরূপায় পাহাড়িদের মালিকানাধীন অন্তত দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। শহরের হ্যাপির মোড়কে কেন্দ্র করে এর দুদিকে অবস্থান নেই পাহাড়ি ও বাঙালিরা।

পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, রাঙামাটিতে সকালে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি হয়। শহরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য পুলিশ সেনাবাহিনী বিজিবির সমন্বয়ে যৌথ টহল টিম শহরে কাজ শুরু করেছে।

রাঙামাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জানান, আমরা মাঠে আছি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি।

রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাদিয়া আক্তার জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে ৫০ জনের মতো আহত হাসপাতালে এসেছে। যাদের মধ্যে অন্তত ৭ জনের অবস্থা গুরুতর।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন খান জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে দুপুর দেড়টা থেকে রাঙামাটি পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, আইএসপিআরের এক বিবৃতিতে জানা যায়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি জেলা সদরে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে কয়েকজন উচ্ছৃঙ্খল জনগণের গণপিটুনিতে মো. মামুন (৩০) নামের একজন যুবক নিহত হয়। পরে সদর থানা পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরদিন (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে দীঘিনালা কলেজ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি দীঘিনালার বোয়ালখালী বাজার অতিক্রম করার সময় ইউপিডিএফের (মূল) কয়েকজন সন্ত্রাসী মিছিলের ওপর হামলা করে ও ২০-৩০ রাউন্ড গুলি ছড়ে। এ প্রেক্ষিতে বিক্ষুব্ধ জনতা বোয়ালখালী বাজারের কয়েকটি দোকানে অগ্নিসংযোগ করে।

এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়, পর্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে গত বৃহস্পতিবার এবং গতকাল শুক্রবার রাঙামাটিতে সৃষ্ট সমস্যা নিরসনে আন্তরিকভাবে কাজ করছে সরকার। বুধবার এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি ও পরে তার মৃত্যুর ঘটনা কেন্দ্র করে চলমান হামলা, আক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনায় সরকার গভীরভাবে দুঃখিত এবং ব্যথিত।

আরও বলা হয়, আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়া এবং ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত না হওয়ার জন্য সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। সহিংসতার সঙ্গে সম্পর্কিত সব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত আর দায়ী ব্যক্তিদের বিচার নিশ্চিত করা হবে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ লক্ষ্যে একটি শক্তিশালী তদন্ত কমিটি শিগগির গঠন করা হবে। আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সোনালী বার্তা/এমএইচ


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর