শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:১২ পূর্বাহ্ন

গলার কাঁটা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র

নিজস্ব প্রতিবেদক / ৩২ Time View
Update : সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

কয়লাভিত্তিক একাধিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র যেন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে পটুয়াখালীবাসীর জন্য। পরিবেশ দূষণ এবং জীববৈচিত্র, বনাঞ্চল ও মৎস্য সম্পদের ক্ষতি নিয়ে শঙ্কিত উপকূলের বাসিন্দারা। পরিবেশবাদীরা বলছেন, কয়লা থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড, বিষাক্ত সালফার, সীসা ও ভারী ধাতু নির্গমনের ফলে ভবিষ্যতে বিদ্যুৎকেন্দ্রের আশপাশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে তৈরি হয়েছে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি,
চিমনি দিয়ে বের হচ্ছে কয়লা পোড়া ধোঁয়া। ২০০ ফুট উঁচু চিমনি দিয়ে ধোঁয়া বের হয়ে উড়ে যাচ্ছে আকাশে। পায়রার কয়লাভিত্তিক ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রতিদিনের চিত্র এটি। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রতিদিন ১২ থেকে ১৩ হাজার মেট্রিক টন কয়লা পোড়ানো হয় এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে।

পরিবেশবিদরা বলছেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অন্যান্য যেকোনো ধরনের বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বেশি কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন করে। এছাড়া বিষাক্ত সালফার ডাই অক্সাইড, নাইট্রোজেন, ক্যাডমিয়াম, সীসা, ছাই, গ্যাস ও ভারি ধাতুর পরিবেশে নির্গমনের ফলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আশেপাশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল দূষণের কবলে পড়েছে। এতে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এমনকি ঝুঁকিতে আশপাশের বন্য ও জলজ প্রাণীও।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুতাসিম বিল্লাহ বলেন, এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র বাইরে থেকে দেখলে মনে হয় খুবই উন্নত। কিন্তু গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় এটির কারণে পরিবেশগত সমস্যাসহ নানাবিধ স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে।

যদিও কর্তৃপক্ষ শুরু থেকেই বলে আসছে, পরিবেশের ক্ষতি না করে করা হয়েছে বিদ্যুৎ কেন্দ্র। পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শাহ আব্দুল হাসিব বলেন, পরিবেশ অধিদফতর নিয়মিত বিদ্যুৎকেন্দ্র মনিটরিং করে। বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ৯৯ শতাংশ ছাই সরানো হয়ে নিয়মিত। এছাড়া ৯৩-৯৪ শতাংশ সালফার সরানো হয়।

আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির মাধ্যমে দূষণ রোধের দাবি করা হলেও, মূলত প্রযুক্তির মাধ্যমে দূষণ সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ কমানো যায় বলে মনে করেন গবেষকরা।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম বলেন, কয়লা পোড়ানোর ফলে সালফার ডাই-অক্সাইড বা কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গত হয়, সেটি খুবই গুরুত্ব সহকারে রিম্যুভ করতে হবে। না হলে বিদ্যুৎকেন্দ্রের আশেপাশের এলাকার পানি-মাটিসহ পুরো পরিবেশেরই ক্ষতি সাধন হবে।

বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ বিনিয়োগে ২০১৭ সালে পটুয়াখালীতে নির্মাণ করা হয় পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। এর দুই বছর পর ২০১৯ সালে এর পাশেই নির্মাণ করা হয় আরপিসিএল-নরিনকো ইন্টারন্যাশনাল পাওয়ার লিমিটেডে (আরএনপিএল) তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র।

সোনালী বার্তা/এমএইচ


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর