সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৫৬ পূর্বাহ্ন

নেশার বড়ির ভাগ না দেয়ায় টোকাই ছোট ভাইকে হত্যা, প্রতিবন্ধি সৎ ভাই গ্রেফতার

কাজী মকবুল গাজীপুর / ৩৮ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

ভিক্ষা করে জমানো প্রতিবন্ধি ভাইয়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে নেশা করা, তাকে মারধর করা এবং নেশার বড়ির ভাগ না পাওয়ায় রাগে ক্ষোভে কাঁচের ভাঙ্গা বোতল দিয়ে আঘাত করে ছোট ভাই টোকাই আবু বকরকে হত্যার ঘটনায় সৎ ভাই প্রতিবন্ধি আব্দুল হালিমকে (৩৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটায় বাঘের বাজার থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জয়দেবপুর থানায় সংবাদ সম্মেলনে গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মিরাজুল ইসলাম চাঞ্চল্যকর হত্যার রহস্য উদঘাটনের তথ্য নিশ্চিত করেন।

হত্যার শিকার আবু বকর আবু বকর ময়মনসিংহের তারাকান্দা থানার গরজা গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে। সে তার সৎ ভাই প্রতিবন্ধি (এক পা পঙ্গু) আব্দুল হালিমকে সাথে নিয়ে বাঘের বাজার ফুট ওভার ব্রীজে রাত যাপন করতো। হালিম ভিক্ষা করতো এবং আবু বকর নেশা করতো। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুল হালিম তার ভাইকে কাঁচের ভাঙ্গা বোতল দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।

গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মিরাজুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে জানান, আব্দুল হালিম ও আবু বকর সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ময়মনসিংহ থেকে গাজীপুরের বাঘের বাজার আসে। ওইদিন রাত ৮ টায় হালিম বাঘের বাজার ফুট ওভার ব্রিজের উপর ভিক্ষা করছিল। এসময় ছোট ভাই আবু বকর নেশা করার জন্য তার কাছ থেকে ১০০ টাকা নেয়। মধ্য রাত হয়ে গেলেও আবু বকর ফিরে না আসায় হালিম ৩ টার দিকে তাকে খুঁজতে বের হয়। পরে স্থানীয় মন্ডল ইন্টিমেন্টস লিমিটেড পোশাক কারখানার সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ডিভাইডারের উপর আবু বকরকে জুতার আঠা বা গাম জাতীয় নেশা সেবন করতে দেখে তার কাছে যায়। এসময় ছোট ভাই আবু বকর প্রতিবন্ধি ভাই হালিমের কাছে নেশা করার জন্য আরো টাকা চায়। এসময় বড় ভাই হালিম ছোট ভাইয়ের কাছে নেশা জাতীয় ঘুমের ২০টি বড়ি চাইলে দিবে না বলে জানায়। উল্টো ছোট ভাই বড় ভাইয়ের কাছে নেশা কেনার জন্য আরো টাকা চায়। টাকা না দিলে ছোট ভাই আবু বকর বড় ভাই হালিমকে চড়-থাপ্পড় ও লাথি মারে। এর কিছুক্ষন পর আবু বকর নেশার বড়ি খেয়ে অচেতন হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। হালিম পাশ থেকে কাঁচের বোতল নিয়ে সড়ক বিভাজকের লোহার রেলিংয়ে ভেঙ্গে বোতল দিয়ে আবু বকরের বুকের দুই পাশের পাঁজরে উপর্যুপরি আঘাত করে তার ভাইকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রাখে। পরে সে ফুট ওভার ব্রিজের উপরে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। সকাল ৬ টার দিকে হালিম ঘুম থেকে উঠে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে ছোট ভাই আবু বকর মারা গেছে। এসময় তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে বিষয়টি পুলিশকে জানালে তারা লাশ উদ্ধার করে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম, পরিদর্শক (তদন্ত)শরিফুল ইসলাম এবং তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) আজিজুর রহমান।

সোনালী বার্তা/এমএইচ


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর