শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ০৬:০৫ পূর্বাহ্ন

গ্রেপ্তার আতঙ্ক কাটেনি আ.লীগ নেতা-কর্মীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক / ১৫৩ Time View
Update : রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৪

সরকার পতনের দুই মাস অতিবাহিত হলেও এখনো হামলা আর গ্রেপ্তার আতঙ্কে রয়েছেন তারা।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থেকে পদত্যাগ করে ভারতে চলে যাওয়ার পর দলের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা আত্মগোপনে চলে যান। আত্মগোপন অবস্থায় অনেকেই দেশ ছাড়েন। এখনো অনেকেই চেষ্টায় আছেন দেশ ছাড়ার।

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে আতঙ্কের পাশাপাশি হতাশা বাড়ছে। দুই মাস ধরে আত্মগোপনে থাকার পর আরও কত দিন এভাবে থাকতে হবে তা নিয়েও ভাবতে হচ্ছে তাদের। তাছাড়া বেশি দিন লুকিয়ে থাকাও অনেকের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর গ্রেপ্তার অভিযানও জোরদার হয়েছে। নেতা-কর্মী ও তাদের বাড়িঘরে হামলার ঘটনাও ঘটে চলেছে বলে আওয়ামী লীগের নেতাদের অভিযোগ।

এদিকে আওয়ামী লীগের ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার এক মাস পার হলে সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে অনেকেই মনে করেছিলেন পরিস্থিতি হয় তো একটু একটু করে স্বাভাবিক হয়ে আসবে। কিন্তু গত ১৫ দিনে ব্যাপকহারে গ্রেপ্তার বেড়েছে। এই সময়ে সারা দেশে তৃণমূল পর্যায়ের কয়েকশ নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছেন। অনেকের বাড়ি-ঘরে হামলাও হয়েছে বলে অভিযোগ মিলেছে। এছাড়া দলটির নেতা-কর্মীদের নামে মামলা দেওয়াও অব্যাহত আছে।

এখন পর্যন্ত যারা গ্রেপ্তার হয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক স্বাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, সাবেক সংসদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের নেতা সাদেক খান, সাবেক হুইপ আ স ম ফিরোজ, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য আহমদ হোসেন, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুস সোবহান গোলাপ, হাজী মো. সেলিম, সাবেক আইজিপি একেএম শহীদুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী, সাবেক সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম সুজন, সাবেক সংসদ সদস্য শাহে আলম, সাবেক জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, সাবেক সংসদ সদস্য তানভীর ইমাম, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ, সাবেক সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জ, সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ্র চন্দ প্রমুখ।

এছাড়া আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের অন্যতম নেতা এবং ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুও গ্রেপ্তার হয়ছেন।

আওয়ামী লীগের ওই সূত্রগুলো আরও জানায়, এর বাইরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্র থেকে শুরু করে জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ডের নেতাসহ হাজার হাজার নেতাকর্মীর নামে মামলা হয়েছে। যাদের নামে মামলা হয়নি তারাও আতঙ্কে আছেন, কখন মামলা হয় বা কোন মামলায় তারা জড়িত হয়ে যান বা গ্রেপ্তার করা হয়।

এর কারণ হিসেবে তারা বলছেন এখন পর্যন্ত যে সব মামলা হয়েছে বা হচ্ছে তার প্রায় প্রতিটি মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় আসামি রয়েছে শত শত। মামলা না থাকলেও গ্রেপ্তার হলেই যে কোনো মালায় আসামি হয়ে যাবেন, এই ভয় তাদের মধ্যে সব সময় কাজ করছে। আবার নতুন করে কোনো মামলায়ও আসামি হতে পারেন। কখন গ্রেপ্তার বা হামলার শিকার হয় এ আতঙ্ক রয়েছে তাদের মধ্যে। এর পাশাপাশি দীর্ঘ দিন আত্মগোপনে থাকতে থাকতে অনেকে হতাশ হয়েও পড়ছেন।

এই দীর্ঘ সময় নেতা-কর্মীরাও পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন। অনেকের সঙ্গেই অনেকের যোগাযোগ নেই। তবে সম্প্রতি দলের ভেরিফায়েড ফেসবুকসহ কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কার্যক্রম সক্রিয় করা হয়েছে। এর মধ্যমে নেতা-কর্মীরা দলের কিছু তথ্য পাচ্ছেন বলে সূত্রগুলো জানায়।

সোনালী বার্তা/এমএইচ


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর