৩৫ বছরে এমন ভয়াবহ বন্যা দেখেনি শেরপুরবাসী!

শেরপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বৃদ্ধি পেয়েছে বিভিন্ন নদীর পানি। লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। এসব পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধারে কাজ করছে স্থানীয় প্রশাসনসহ সেচ্ছাসেবী সংগঠন, বিজিবি এবং সর্বশেষ ৫ অক্টোবর সকাল থেকে সেনাবাহিনীর সদস্যরাও উদ্ধারকাজে যুক্ত হয়েছেন। এই পর্যন্ত ৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
শনিবার (৫ অক্টোবর) নতুন করে শেরপুর সদর এবং নকলা উপজেলার আরও ৬টি ইউনিয়ন পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
সরেজমিন পরিদর্শন ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় শেরপুরের মহারশি, সোমেশ্বরী, চেল্লাখালি, ভোগাই ও মৃগী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে শেরপুরের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে। এখন পর্যন্ত শেরপুরের ৫টি উপজেলার ২৮টি ইউনিয়নের দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। আর পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন দেড় লাখেরও বেশি মানুষ। ঝিনাইগাতী এবং নালিতাবাড়ী উপজেলার সব সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। গত ৩৫ বছরের মধ্যে এমন ভয়াবহ বন্যা দেখেনি স্থানীয়রা।
শেরপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রনব কুমার কর্মকারের দেওয়া তথ্যমতে, শুধু ঝিনাইগাতী এবং নালিতাবাড়ী উপজেলায় ২ হাজার ৫৭টি মাছের ঘেড় ভেসে গেছে। ক্ষতির পরিমাণ প্রাথমিক হিসাবে ১১ কোটি টাকার বেশি।
কৃষি অফিসের তথ্যমতে, জেলার অন্তত ২০ হাজার হেক্টর আমন আবাদ এবং এক হাজার হেক্টর সবজির আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে অন্তত ৬৫ হাজার ৪০০ কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
ঝিনাইগাতী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, পানিবন্দি মানুষদের সঠিকভাবে উদ্ধার করতে সফল হয়েছি। অনেককে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদের জন্য বিশুদ্ধ পানি এবং শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। উপজেলার ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, জেলার তিনটি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। দুর্গতদের উদ্ধারে ও শুকনো খাবার পৌঁছে দিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। একই সঙ্গে নতুন নতুন এলাকায় প্লাবিত হওয়ার খবর পাচ্ছি।
সোনালী বার্তা/এমএইচ