সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ১০:৩৭ অপরাহ্ন

১৮ আর্থিক প্রতিষ্ঠান ‘লাইফ সাপোর্টে’

নিজস্ব প্রতিবেদক / ১২৭ Time View
Update : রবিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৪

দেশে বর্তমানে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩৫টি। বহুল আলোচিত প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার, এস আলমসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে এখন বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানই অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে। তাদের মধ্যে ১৮টি কোনোমতে বাঁচিয়ে রাখা (লাইফ সাপোর্ট) হয়েছে। এই ১৮টির মধ্যে ৯টিই মুমূর্ষু। বাকি ৯টি অতিরুগণ, কোনোমতে টিকে আছে। এ ছাড়া রুগণ প্রতিষ্ঠান হিসাব করলে দেশের মোট ২৮টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অবস্থায় খারাপ। কিছুটা ভালো অবস্থানে রয়েছে সাতটি প্রতিষ্ঠান। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, জুন শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে রয়েছে ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট। পি কে হালদারসহ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রাসেল শাহরিয়া ও সব পরিচালকচক্র প্রতিষ্ঠানটির সিংহভাগ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। এতে প্রতিষ্ঠাটির ৯৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ ঋণই খেলাপি হয়ে পড়েছে। গত জুন শেষে প্রতিষ্ঠানটি মোট বিতরণ করেছে ১ হাজার ৮২৩ কোটি টাকার ঋণ। এর মধ্যে খেলাপি হয়ে পড়েছে ১ হাজার ৮২১ কোটি টাকা। শুধু তা-ই নয়, প্রতিষ্ঠানটির নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) ঘাটতি ৫৫০ কোটি টাকা।

তথ্য বলছে, দেশের নন-ব্যাংকিং আর্থিক খাতে প্রশান্ত কুমার হালদারের আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনার পরে মুখ থুবড়ে পড়েছিল বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। অন্তত চারটি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের পর দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান তিনি। আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতে না পেরে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান অবসায়নেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিগত সরকার। কিন্তু পরে আদালতের নির্দেশে আবারও পুনরুজ্জীবিত করা হয় এসব প্রতিষ্ঠান। যদিও প্রতিষ্ঠানগুলোর ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা দেখছেন না আর্থিক খাতের বিশ্লেষকরা।

মুমূর্ষু ৯ প্রতিষ্ঠান: চলতি বছরের জুন শেষে দেশের ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৯টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে মুমূর্ষু অবস্থায়। এসব প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৮০ থেকে ১০০ শতাংশ। এর মধ্যে আর্থিক খাতের বহুল আলোচিত ব্যক্তি পি কে হালদারের মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় ছিল—এমন কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে খেলাপি ঋণের হার সবচেয়ে বেশি।

দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পি কে হালদার-সংশ্লিষ্ট আলোচিত প্রতিষ্ঠান পিপলস লিজিং। এই প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের হার ৯৯ দশমিক ৪০ শতাংশ। এই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির মোট ঋণ ১ হাজার ৭৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়ে পড়েছে ১ হাজার ৬৮ কোটি টাকা। জুন শেষে প্রতিষ্ঠানটির প্রভিশন ঘাটতি নেই।

তৃতীয় অবস্থানে পি কে হালদার-সংশ্লিষ্ট আরেক প্রতিষ্ঠান ফারইস্ট ফাইন্যান্স। প্রতিষ্ঠানটির মোট ঋণের ৮৯১ কোটি টাকার মধ্যে ৯৭ দশমিক ৯৬ শতাংশই খেলাপি। প্রভিশন ঘাটতি না হলেও খেলাপিসহ অন্যান্য কারণে প্রতিষ্ঠানটি এখন পর্যন্ত ১৩১ কোটি টাকার লভ্যাংশ নিজ হিসাবে যুক্ত করতে ব্যর্থ হচ্ছে।

পি কে হালদারের ৩ প্রতিষ্ঠানে ৫০ কোটি ছাড়াও ফারইস্টের সবচেয়ে বড় ঋণখেলাপি ব্রোকারেজ হাউস ফারইস্ট স্টক অ্যান্ড বন্ডস লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান এম এ খালেক, যিনি একসময় ফারইস্ট ফাইন্যান্সেরও চেয়ারম্যান ছিলেন। ব্রোকারেজ হাউসটির কাছে আটকে আছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। এরপর ওয়েস্টার্ন মেরিনে ১৭ কোটি, সানম্যান গ্রুপে ১৫ কোটি, প্রাইম ফাইন্যান্স গ্রুপে ১৪ ও ইমাম গ্রুপে ১৩ কোটি টাকা।

বিকল্পধারার মহাসচিব আবদুল মান্নানের বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স করপোরেশন লিমিটেড (বিআইএফসি) বর্তমানে খেলাপির দিক দিয়ে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। জুন শেষে প্রতিষ্ঠানটির মোট ঋণ দাঁড়িয়েছে ৭৬৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়ে পড়েছে ৭৪৩ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৯৭ শতাংশ। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির প্রভিশন ঘাটতিও রয়েছে আড়াই কোটি টাকার বেশি। বিআইএফসির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান এই প্রতিষ্ঠানে মোট শেয়ারের প্রায় ৬২ শতাংশই দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া সানম্যান গ্রুপ-সংশ্লিষ্ট ৫৪ প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে এ প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ বের করে নেওয়া হয়েছে। এসব ঋণের সঙ্গে আবদুল মান্নান জড়িত। আর এ ঋণ বিতরণের সময় বিআইএফসির চেয়ারম্যান ছিলেন তার স্ত্রী উম্মে কুলসুম মান্নান। সবশেষ হিসাবে, বিআইএফসির ঋণের মধ্যে আবদুল মান্নান-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছে পাওনা প্রায় ৬২১ কোটি টাকা। এর পুরোটাই খেলাপি। সুদসহ হিসাব করলে আবদুল মান্নানের কাছেই আটকা প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা।

তালিকায় পঞ্চম অবস্থানে থাকা ইন্টারন্যাশনাল লিজিং লুটে নেতৃত্ব দিয়েছেন আলোচিত পি কে হালদার। প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ৪ হাজার ১২৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়ে পড়েছে ৩ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৯৩ দশমিক ৬০ শতাংশ। অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠান দিয়ে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড থেকে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা লুটে নেওয়া হয়েছে। এ কারণে প্রতিষ্ঠানটি এখন পথে বসেছে। আলোচিত পি কে হালদারের নেতৃত্বে টাকাগুলো লুট করা হয়। এর মূল চাবিকাঠি নাড়েন রিলায়েন্স ফাইন্যান্সের তখনকার ডিএমডি রাশেদুল হক, যিনি পরে প্রতিষ্ঠানটির এমডিও হন। শুধু তা-ই নয়, অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে জড়িত ছিল এই চক্র। মূলত এই প্রতিষ্ঠানের ঋণের সিংহভাগেরই সুবিধাভোগী পি কে হালদার ও চট্টগ্রামভিত্তিক আলোচিত ব্যবসায়িক গ্রুপ এস আলম।

শেয়ারবাজারে সীমাতিরিক্ত বিনিয়োগ করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ইউনিয়ন ক্যাপিটাল আছে তালিকার ষষ্ঠ অবস্থানে। জুন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২১০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়ে পড়েছে ১ হাজার ১২৪ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৯২ দশমিক ৯৪ শতাংশ। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি বেসরকারি খাতের প্রাইম ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।

নেতৃত্বের দুর্বলতায় ডুবতে বসা ফার্স্ট ফাইন্যান্সে মুমূর্ষু প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকায় রয়েছে সপ্তম স্থানে। জুন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ৮০৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৭০৮ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৮৮ শতাংশ। প্রতিষ্ঠানটির প্রভিশন ঘাটতি রয়েছে ৮৩ কোটি টাকার বেশি।

চট্টগ্রামভিত্তিক বিতর্কিত ব্যবসায়িক গ্রুপ এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা আভিভা ফাইন্যান্স আছে তালিকার অষ্টম অবস্থানে। প্রতিষ্ঠানটির আগের নাম ছিল রিলায়েন্স ফাইন্যান্স। পি কে হালদারের মাধ্যমে এস আলম গ্রুপ চার-পাঁচটি প্রতিষ্ঠান লুট করেছে। তার মধ্যে রিলায়েন্স ফাইন্যান্স ছিল অন্যতম। পরে প্রতিষ্ঠানটির নাম পরিবর্তন করে আভিভা ফাইন্যান্স রাখা হয়। কিন্তু চরিত্রের কোনো পরিবর্তন হয়নি। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির বিতরণকৃত মোট ঋণের পরিমাণ ২ হাজার ৭৮৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২ হাজার ৩৫৪ কোটি টাকাই খেলাপি, যা মোট ঋণের ৮৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ। প্রতিষ্ঠানটির প্রভিশন ঘাটতি রয়েছে ৪৪১ কোটি টাকা।

ঋণ অনিয়মসহ নানা কারণে ডুবতে বসা ফিনিক্স ফাইন্যান্স আছে তালিকার নবম স্থানে। অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় প্রতিষ্ঠানটির সাবেক এমডিকে গত বছরের ডিসেম্বরে বরখাস্ত করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘গ্রাহক প্রতিষ্ঠান এস এ অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড, আমান সিমেন্ট মিলস ইউনিট-২, মনোস্পুল পেপার ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি, মাহিন এন্টারপ্রাইজ, ম্যাক স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ এবং গ্রাহক নাজমা পারভিন, ফারহান মোশাররফের ঋণে অনিয়মের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের অভ্যন্তরীণ তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ প্রশাসনিক ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তদন্ত কার্যক্রম শেষ করে প্রশাসনিক ও আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন থাকাকালীন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিদেশভ্রমণ থেকে বিরত রাখার জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।’

জুন শেষে প্রতিষ্ঠানটির বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬৪৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়ে পড়েছে ২ হাজার ২৩৪ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৮৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ। প্রতিষ্ঠানটির প্রভিশন ঘাটতি বর্তমানে ১৪ কোটি টাকা।

অতিরুগণ ৯ প্রতিষ্ঠান: অতিরুগণ অবস্থায় রয়েছে আরও ৯টি প্রতিষ্ঠান। যেসব প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের হার ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত। এসব প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা প্রিমিয়ার লিজিংয়ের খেলাপি ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ, সিভিসি ফাইন্যান্সের ৭২ দশমিক ৩৭ শতাংশ ও প্রাইম ফাইন্যান্সের ৭০ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এ ছাড়া আইআইডিএফসির ৬৭ দশমিক ২৩ শতাংশ, ন্যাশনাল ফাইন্যান্সের ৬৪ দশমিক ৫৮, জিএসপি ফাইন্যান্সের ৫৮ দশমিক ৪৩, উত্তরা ফাইন্যান্সের ৫৪ দশমিক ৮৩, বে-লিজিংয়ের ৫৩ দশমিক ৮৯ এবং হজ্জ ফাইন্যান্সের ৫১ দশমিক ৪৭ শতাংশ।

এর বাইরে ২০ থেকে ৫০ শতাংশ খেলাপি থাকা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা পাঁচটি এবং ১০ থেকে ২০ শতাংশ খেলাপি থাকা প্রতিষ্ঠান পাঁচটি। এ ছাড়া সাতটি প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ১০ শতাংশের নিচে। এর মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে থাকা প্রতিষ্ঠান রয়েছে চারটি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিএলএফসিএ) চেয়ারম্যান ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স কোম্পানি লিমিটেডের এমডি এবং সিইও মো. গোলাম সরওয়ার ভূঁইয়া কালবেলাকে বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণগুলো অনেক আগের। গত ৪-৫ বছরে সেখানে তেমন কোনো অনিয়ম হয়নি। কিন্তু অর্থ উত্তোলন করতে না পারায় আগের ঋণের অনেকগুলোই খেলাপি হয়ে পড়েছে। আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নীতির সহায়তা চেয়েছি। কেন্দ্রীয় ব্যাংককে বলেছি, যাতে দীর্ঘদিন আগের ঋণগুলো আদায়ের ক্ষেত্রে সুদ মওকুফের বিধান রাখা হয়। এ ছাড়া অর্থঋণ আদালতগুলোকেও আরও সচল করতে হবে। শুধু তা-ই নয়, অর্থঋণ আদালতের সংখ্যাও বৃদ্ধি করতে হবে। কারণ আদালতের সংখ্যা কম হওয়ায় এক মামলা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করতে হচ্ছে। দ্রুত মামলাগুলো নিষ্পত্তি করা গেলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো কিছুটা ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। আর আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষও আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার দরকার বলেও মনে করেন এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানবিদ।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সংস্কারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা কী হওয়া দরকার, সে বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থনীতিবিদ নুরুল আমিন কালবেলাকে বলেন, বর্তমানে কয়েকটি ব্যাংকের অবস্থার উন্নতির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে। ব্যাংকগুলোর ওপর যে ধরনের নীতি প্রয়োগ করা হয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রেও সে ধরনের নীতি প্রয়োগ করা দরকার। অনিয়মে জড়িতদের সরিয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বোর্ড পুনর্গঠন ও নীতি সহায়তার মাধ্যমে তাদের টেনে তোলা যায়।

তিনি আরও বলেন, আমাদের এখানে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কার্যক্রম দেখাতে পারেনি। তারা নতুন নতুন পণ্য নিয়ে আসতে পারেনি। শেয়ারবাজারেও তাদের অবদান নেই। এজন্যই একটা বড় ব্যাংকের বড় শাখা দেশের অর্থনীতিতে যে ধরনের অবদান রাখছে, পুরো খাত মিলেও সেই অবদান রাখতে পারছে না আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। তাই আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বিস্তারেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজর দেওয়া দরকার।

পিপলস লিজিংয়ের এমডি সগির হোসাইন খান বলেন, ‘গণমাধ্যমে কথা বলার জন্য আমার এখতিয়ার নেই। এসব বিষয়ে কথা বলবেন আমাদের চেয়ারম্যান।’ চেয়ারম্যানের নম্বর বন্ধ আছে জানানো হলে অফিস খোলা অবস্থায় অফিসে যোগাযোগের পরামর্শ দেন তিনি।

সোনালী বার্তা/এমএইচ


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর