নতুন ভোটার তালিকা তৈরিতে সময় লাগবে ৯ থেকে ১০ মাস

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রথমেই যথাযথ ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা দরকার। নতুন ভোটার তালিকা তৈরিতে সময় লাগতে পারে ৯ থেকে ১০ মাস। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পর্কে অক্টোবরের শুরুতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অবহিত করেছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়।
সাধারণত প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করার মাধ্যমে নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। তবে, নির্বাচন কমিশন বর্তমানে কার্যকর না থাকায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়কে এই প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে।
ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন হলে ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ ভোটার তালিকা তৈরি হতে পারে।
জানা গেছে, তথ্য সংগ্রহের জন্য কমপক্ষে এক মাস, নিবন্ধন করতে সাত থেকে আট মাস, খসড়া তালিকার জন্য ১৫ দিন এবং ভোটারদের মতামত ও আপত্তি নিষ্পত্তির জন্য আরও ১৫ দিন সময় লাগবে।
নির্বাচনের এই প্রক্রিয়া শুরু করার আগে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। কমিশন গঠনের জন্য প্রয়োজন হবে সার্চ কমিটি। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) এই সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সংবিধানের ১১৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি ও সংসদ নির্বাচনের ভোটার তালিকা প্রণয়ন, তত্ত্বাবধান, নির্দেশনা ও নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন-২০২২ অনুযায়ী, কমিশন নিয়োগে গঠিত সার্চ কমিটির সচিবালয় হিসেবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কাজ করবে।
মঙ্গলবার দুপুরে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘আপনাদেরকে আমি একটি বিষয় বলতে পারি, আমাদের সরকারের নির্বাচনমুখি যাত্রা শুরু হয়ে গেছে। নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি গঠন হয়ে গেছে। আমি যতদূর জানি, প্রধান উপদেষ্টা এই বিষয়ে প্রজ্ঞাপন সই করে দিলেই আজ-কালের মধ্যে আপনারা এটি জানতে পারবেন। সার্চ কমিটি হয়ে গেলে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে।’
এরপর রাতে ঘোষণা আসে, হাইকোর্টের বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীকে প্রধান করে নির্বাচন কমিশন গঠনে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আসিফ নজরুল আরও বলেছিলেন, সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন হয়ে গেলে ‘এরপর ভোটার তালিকা করা হবে।’
বর্তমানে বাংলাদেশে নিবন্ধিত ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ১৮ লাখ, যার মধ্যে পুরুষ প্রায় ছয় কোটি ২১ লাখ, নারী পাঁচ কোটি ৯৭ লাখ এবং তৃতীয় লিঙ্গের ৯৩২ জন।
নির্বাচনসংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে জানা গেছে, একটি স্বচ্ছ নির্বাচনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে অন্তর্বর্তী সরকার নতুন ভোটার তালিকা তৈরি করতে চায়।
ভোটার তালিকা আইন-২০০৯ অনুযায়ী, প্রতি বছর এই তালিকার হালনাগাদ করা হয়। তবে, জনগণের চাহিদার বিবেচনায় ভিন্ন পথে হাঁটতে চাইছে সরকার।
ভোটার তালিকা আইন-২০০৯ অনুযায়ী, প্রতি বছর ২ জানুয়ারি থেকে ২ মার্চের মধ্যে এই বার্ষিক হালনাগাদ বাধ্যতামূলক। তবে, বিশেষ সংশোধনের এখতিয়ার রয়েছে নির্বাচন কমিশনের।
সে হিসাবে, আগামী বছরের ২ মার্চের মধ্যে হালনাগাদ ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করতে আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের।
সূত্র: ডেইলি স্টার
সোনালী বার্তা/এমএইচ