সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০১:০৭ পূর্বাহ্ন

৬ ব্যাংকে টাস্কফোর্সের অনুসন্ধান শুরু

সিনিয়র রিপোর্টার / ৮০ Time View
Update : বুধবার, ৮ জানুয়ারী, ২০২৫

ঋণ কেলেঙ্কারিতে দুর্দশায় পড়া ছয় ব্যাংকের এমডিকে সরিয়ে দেওয়ার পর আর্থিক অনুসন্ধান শুরু করেছে ব্যাংক খাতের সংস্কারে গঠিত টাস্কফোর্স।

 

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংকে এই অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।

 

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান বলেন, “পর্যায়ক্রমে ব্যাংকগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছে টাস্কফোর্স। তাদের অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।”

 

আরও পড়ুন: ৪.২৩ শতাংশ কমেছে জিডিপি প্রবৃদ্ধি

 

চলতি সপ্তাহেই এসব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠায় বাংলাদেশ ব্যাংক।

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা সে সময় বলেছিলেন, এসব ব্যাংকে ফরেনসিক অডিট করা হবে। এই নিরীক্ষায় যেন প্রভাব বিস্তার না করতে পারে, সেজন্যেই পুরনো এমডিদের ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।

 

এ ছয় ব্যাংকের মধ্যে আইসিবি ইসলামিক ও এক্সিম ছাড়া বাকি চারটির পর্ষদ দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত ব্যবসায়ী এস আলম ও তার পরিবারের নিয়ন্ত্রণে ছিল। এতে ব্যবস্থাপনা ও নিয়োগের সবকিছুও তারা নিরঙ্কুশভাবে নিয়ন্ত্রণ করতেন বলে অভিযোগ ছিল।

 

ব্যাংকগুলো থেকে নামে ও ভিন্ন নামে ঋণের নামে টাকা বের করে নেন এস আলম। দীর্ঘদিন অপরিশোধিত থাকায় সেগুলো খেলাপি ঋণে পরিণত হয়েছে।

 

ক্ষমতার পালাবদলের পর এসব ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ এস আলমের হাতের বাইরে চলে যায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের দায়িত্ব নেওয়ার পর আহসান এইচ মনসুর এসব ব্যাংকে নতুন পরিচালনা বোর্ড গঠন করে দেন।

 

টাস্কফোর্সের একজন ঊর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, এসব ব্যাংক থেকে কী পরিমাণ অর্থ ঋণের নামে বের হয়ে গেছে, সুবিধাভোগী কারা, ঋণের গন্তব্য এবং ব্যাংকের সম্পদের মান বের করতে প্রথম ধাপে এই ছয় ব্যাংকে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।

 

আন্তর্জাতিক দুটি অডিট ফার্মের সদস্যরা শিগগিরই ছয় সদস্যের টাস্কফোর্স টিমের সঙ্গে যুক্ত হবে বলে জানান তিনি।

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, টাস্কফোর্স সোমবার থেকে ব্যাংকগুলোতে অডিট শুরু করেছে। প্রথম দিন ব্যাংকের ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে বসেছেন তারা।

 

আরও পড়ুন: ডলারের দাম বাজারমুখী করার সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের

 

তিনি বলেন, টাস্কফোর্স এসব ব্যাংকের আর্থিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবে। অ্যাসেট কোয়ালিটি নিয়ে সামনে কাজ করবে। অনেক ব্যাংক কাগজে কলমে কিছু অ্যাসেট তৈরি করে, বাস্তবে যা নেই। এসব বিষয়ও গুরুত্ব সহকারে পর্যালোচনা করা হবে।

 

“ব্যাংকগুলোতে ঋণের নানা অনিয়মের ঘটনা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন টিম বের করবে। এসব প্রতিবেদন টাস্কফোর্সের সঙ্গে সমন্বয় করবে।”

 

গত অগাস্টে ক্ষমতার পালাবদলের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে নানা ক্ষেত্রে সংস্কারে হাত দেয়। এর অংশ হিসেবে অনিয়মে জর্জরিত ব্যাংক খাতেও সংস্কার শুরু হয়।

 

নতুন গভর্নর ১১টি ব্যাংকে প্রশাসক নিয়োগ দেন। ধুঁকতে থাকা বেশ কয়েকটি ইসলামী ব্যাংকের নতুন ঋণ দেওয়াও বন্ধ করে দেন। ঋণ কেলেঙ্কারি ও খেলাপি ঋণে ন্যুব্জ ব্যাংকিং খাত সংস্কারে গঠন করা হয় ছয় সদস্যের এই টাস্কফোর্স।

 

এই টাস্কফোর্স কী কী করবে, সে বিষয়ে একটি তালিকা দেওয়া হলেও কত দিনে কাজগুলো করা হবে, সে বিষয়ে কোনো ধারণা দেওয়া হয়নি।

 

সে সময় বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছিল, এ টাস্কফোর্স আর্থিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় ব্যাংকিং খাতের বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতি, মন্দ সম্পদ এবং প্রধান প্রধান ঝুঁকিসমূহ নিরূপণ, দুর্বল ব্যাংকগুলোর আর্থিক সূচক পর্যালোচনা, ঋণের প্রকৃত অবস্থা নিরূপণ, প্রভিশন ঘাটতি নিরূপণ করবে।

 

এছাড়া তারল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা, নিট মূলধন নির্ণয়, সম্পদের প্রকৃত মূল্য নির্ধারণ, সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের মন্দ সম্পদকে পৃথকীকরণ সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

 

এমআর/


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর