মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৮:৩৭ পূর্বাহ্ন

ডায়াবেটিস রোগীদের রোজার পূর্ব প্রস্তুতি কেমন হবে

ডেস্ক রিপোর্ট / ১১৬ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

রোজায় অন্যসময়ের খাদ্যাভ্যাস এবং দৈনন্দিন কাজের একটু তারতম্য হয় কিছুটা। সারাবছর দিনের তিন-চার বেলা খাবার গ্রহণ করলেও রোজায় সেই সুযোগ থাকে না আমাদের। তবে সুস্থ মানুষের জন্য রোজা রাখা যতটা সহজ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় যারা ভুগছেন তাদের পক্ষে সম্ভব না।

 

আরও পড়ুন: ক্যান্সারের যম পেঁপের বীজ! কিডনিও থাকে সুস্থ-সবল

 

বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীরা। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য রমজান মাসে রোজা রাখা একটি চ্যালেঞ্জ হতে পারে। রোজার সময় দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকার ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যেতে পারে, আবার ইফতার ও সেহরিতে অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। তাই রোজা শুরুর আগে সঠিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জেনে নিন সেসব-

 

চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ
রোজা রাখার আগে অবশ্যই আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন। তিনি আপনার শারীরিক অবস্থা মূল্যায়ন করে রোজা রাখার উপযুক্ততা নির্ধারণ করবেন এবং প্রয়োজন হলে ওষুধের মাত্রা ও সময়সূচিতে পরিবর্তন আনবেন।

 

খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা
রোজার সময় খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আসবে, তাই পূর্বেই সঠিক পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। সুষম খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে শর্করা, প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন এবং খনিজের সঠিক সমন্বয় থাকে। সেহরি ও ইফতারে উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার, যেমন লাল আটা, ওটস, শাকসবজি এবং চিবিয়ে খাওয়া যায় এমন ফলমূল গ্রহণ করুন। এগুলো রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

 

সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি নির্ধারণ
সেহরি যতটা সম্ভব দেরিতে এবং ইফতার সময়মতো করুন। সেহরিতে ধীরপাচ্য কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন, যা দীর্ঘক্ষণ শক্তি প্রদান করে। ইফতারে দ্রুত শোষণযোগ্য কার্বোহাইড্রেট, যেমন খেজুর দিয়ে রোজা ভাঙুন, তবে পরিমাণে সংযম বজায় রাখুন।

 

পর্যাপ্ত পানি পান
রোজার সময় পানিশূন্যতা এড়াতে ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। চিনি যুক্ত পানীয় পরিহার করুন, কারণ এগুলো রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে।

 

শারীরিক পরিশ্রম ও ব্যায়াম
রোজার সময় অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম এড়িয়ে চলুন, বিশেষ করে দিনের সময়। হালকা ব্যায়াম, যেমন সন্ধ্যায় হাঁটা, ইফতারের পর করতে পারেন।

 

রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়মিত পরিমাপ
রোজার সময় রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়মিত পরিমাপ করুন। যদি শর্করার মাত্রা খুব কমে যায় (হাইপোগ্লাইসেমিয়া) বা খুব বেড়ে যায় (হাইপারগ্লাইসেমিয়া), তবে রোজা ভেঙে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।

 

ওষুধ ও ইনসুলিনের সময়সূচি সমন্বয়
রোজার সময় ওষুধ ও ইনসুলিনের সময়সূচি পরিবর্তন করতে হতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেহরি ও ইফতারের সঙ্গে ওষুধ গ্রহণের সময় নির্ধারণ করুন।

 

ইফতারে পরিমিত খাবার গ্রহণ
ইফতারে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন। পরিমিত পরিমাণে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুন, যাতে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে না যায়।

 

মানসিক প্রস্তুতি
রোজার সময় মানসিক চাপ ও উদ্বেগ এড়িয়ে চলুন। মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিন এবং প্রয়োজন হলে পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের সহায়তা নিন।

 

সঠিক প্রস্তুতি ও সচেতনতার মাধ্যমে ডায়াবেটিস রোগীরাও নিরাপদে রোজা পালন করতে পারেন। তবে সবসময় চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা উচিত এবং শরীরের সংকেতগুলোকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা উচিত।

এমআর/


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর