মাদারীপুরে এনসিপির নেতাকে কুপিয়ে জখম, কমিটি স্থগিত

মাদারীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব মাসুম বিল্লাহকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জেলা ও সদর উপজেলায় গঠিত সমন্বয় কমিটি স্থগিত করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার (২৫ জুন) রাত ২টার দিকে এনসিপির ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানায় দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সদস্যসচিব (দফতর) সালেহ উদ্দিন সিফাত। এ দিকে হামলার ঘটনায় থানায় মামলা হলেও গ্রেফতার হয়নি কেউ।
দুটি আলাদা বিজ্ঞপ্তির সূত্র জানায়, দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ তুলে এনসিপির মাদারীপুর জেলা সমন্বয় কমিটি ও মাদারীপুর জেলার অধীনে থাকা সদর উপজেলা সমন্বয় কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করার অনুমোদন করেন দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ।
পরে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম ও সদস্য সচিব আখতার হোসেনের নির্দেশনা অনুসারে মাদারীপুরে এনসিপির দুটি কমিটি স্থগিতের ঘোষণা করেন।
এর আগে মাদারীপুর জেলা ও সদর উপজেলা এনসিপির সমন্বয় কমিটি স্থগিতের ঠিক আধা ঘণ্টা আগে জেলা এনসিপির ৫ নম্বর সদস্য মো. আব্দুল্লাহ আদিল মাহমুদ টুটুল ও ৬নম্বর সদস্য রাতুল হাওলাদারকে শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে সদস্য পদসহ সব সাংগঠনিক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সম্প্রতি এনসিপির ৩১ সদস্যের সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি গঠনে ক্ষোভ করে তা প্রত্যাখ্যান করেন জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক নেয়ামত উল্লাহ, সদস্য সচিব মাসুম বিল্লাহসহ অনেকেই। জেলা কমিটি হওয়ার তিনদিন পর জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে মাদারীপুর সদর উপজেলায় ২৬ সদস্যের এনসিপি আরও একটি কমিটি গঠন করে। পরে এই নিয়ে দুপক্ষের বিরোধ শুরু হয়।
একাধিক সূত্র জানায়, বুধবার বিকেলে শহরের বাদামতলা এলাকার ভূঁইয়া কমিউনিটি সেন্টারের এনসিপির কর্মী সভায় যোগ দেন জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব মাসুম বিল্লাহসহ জেলা ও উপজেলার নেতাকর্মীরা। সভা শুরুর আগেই ভূঁইয়া কমিউনিটি সেন্টারের ভেতরে এনসিপির জেলা কমিটির সদস্য রাতুল হাওলাদার ও আদিল মাহমুদ টুটুলের নেতৃত্বে মাসুম বিল্লাহ’র ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। এ সময় মাসুমকে কুপিয়ে ও হাতুড়িপেটা করে জখম করা হয়।
এ সময় আশপাশের লোকজন ছুটে এলে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। পরে মাসুমকে উদ্ধার করে ভর্তি করা হয় ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে। পরে অবস্থার অবনতি হলে পাঠানো হয় রাজধানী ঢাকা মেডিকেলে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশ।
এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন মাসুমের সহকর্মী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। এই হামলার ঘটনায় মাসুদের সহকর্মী আকাশ মাতুব্বর বাদী হয়ে ৮ জনের নামে সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। তবে, এখনো কাউকেই আটক করতে পারেনি পুলিশ।
এ ব্যাপারে জানতে মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আদিল হোসেনের সরকারি ব্যবহৃত মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এমআর/