গাজায় ইসরায়েলের হামলায় নিহত আরও ৭৭ ফিলিস্তিনি
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর টানা হামলায় একদিনে আরও অন্তত ৭৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
শুধু গাজা নগরীতেই প্রাণ হারিয়েছেন ৪৭ জন। নিহতদের মধ্যে ১১ জন ছিলেন রুটি সংগ্রহের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা সাধারণ মানুষ। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
গাজা নগরীতে বোমাবর্ষণ ও জোরপূর্বক উচ্ছেদ অভিযানের মুখে শত শত ফিলিস্তিনি ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছেন। অল্প কিছু মালপত্র নিয়ে তারা ট্রাক, ভ্যান ও গাধার গাড়িতে করে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বেরিয়ে পড়ছেন। অনেক পরিবার বারবার ঘর হারিয়ে এখন দেইর আল-বালাহ অঞ্চলে অস্থায়ী তাঁবুতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে।
বাস্তুচ্যুত এক ফিলিস্তিনি বলেন, “আমরা রাস্তায় পড়ে আছি। কুকুরের থেকেও খারাপ অবস্থায় আছি আমরা।” আরেকজন জানান, উত্তর গাজা ছেড়ে পশ্চিম দিকে যাচ্ছেন, তবে কোথাও নিরাপদ জায়গা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ আশঙ্কা প্রকাশ করে জানিয়েছে, নগরী দখল ও প্রায় ১০ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করার লক্ষ্যেই টানা অভিযান চালানো হচ্ছে। হাসপাতাল সূত্র বলছে, একদিনেই নিহত ৭৭ জনের বাইরে আরও অনেকে আহত হয়েছেন।
শুধু রুটির লাইনে নয়, আবাসিক ভবন ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় হামলায় বহু হতাহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে মরদেহ উদ্ধারে কাজ করছেন স্বেচ্ছাসেবকরা। সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, শহরের ঘরবাড়ি, কমিউনিটি সেন্টার, বাজার সবই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। দুর্ভিক্ষ, অনাহার ও পানিশূন্যতার সঙ্গে যুক্ত হয়ে পুরো পরিস্থিতি এখন এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ে গড়াচ্ছে।
আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলো এ উচ্ছেদ পরিকল্পনাকে “অবাস্তব ও অগ্রহণযোগ্য” হিসেবে বর্ণনা করেছে। তাদের মতে, বর্তমান অবস্থায় নিরাপদ ও সম্মানজনকভাবে গণহারে বাস্তুচ্যুতি কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তবুও আন্তর্জাতিক নিন্দা উপেক্ষা করে ইসরায়েলি বাহিনী অভিযানে কোনো বিরতি দিচ্ছে না।
গত বছরের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই যুদ্ধ ইতোমধ্যেই হাজারো ফিলিস্তিনির প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, বিধ্বস্ত হয়েছে স্বাস্থ্যসেবা ও খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা। বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক আইনে মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল হতে পারে।
এমআর/






