সন্ধ্যায় জাতীয় নির্বাচনের তফসিল
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে আজ (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায়। বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বাংলাদেশ বেতারে একযোগে সম্প্রচার করা হবে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের তফসিল ঘোষণার ভাষণ।
গতকালই বিটিভি ও বেতারে ভাষণ রেকর্ড করেছেন সিইসি। রেকর্ড করা ভাষণ আজ সন্ধ্যা ৬টায় সম্প্রচার করা হবে বলে জানিয়েছেন ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
জানা গেছে, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে পারে। এরমধ্যে ১২ ফেব্রুয়ারিকে ভোটগ্রহণের সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত দিন হিসেবে বিবেচনা করছে ইসি। কমিশন তফসিল ও ভোটগ্রহণের দিন নিয়ে অত্যন্ত গোপনীয়তা রক্ষা করছে। তবে বিকল্প দিনেও ভোট হতে পারে বলে জানিয়েছে ইসি কর্মকর্তারা।
এদিকে বাগেরহাট ও গাজীপুরের আসন নিয়ে গতকাল হাইকোর্টের রায়ের বিষয়ে ইসি সচিব সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আমরা এখনও আদালতের রায় হাতে পাইনি। সেজন্য আপাতত নির্বাচন কমিশনের গেজেটেড ৩০০ সংসদীয় আসনেই তফসিল ঘোষণা করা হবে। আদালতের রায় পাওয়ার পর কমিশনের পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
গতকাল বিকেল ৪টায় আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বাংলাদেশ বেতারে তফসিল ঘোষণার ভাষণ রেকর্ড করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। ভাষণ রেকর্ডের পর সব কমিশনাররা সিইসির রুমে বৈঠক করেন।
ইসির এক কর্মকর্তা জানান, ভোটগ্রহণের পর রোজার আগে অন্তত সপ্তাহখানেক সময় হাতে রাখতে চায় নির্বাচন কমিশন। কারণ, ভোটের দিন অনিয়ম, মারামারি বা হানাহানির কারণে যেসব কেন্দ্রে বা আসনে ভোট বন্ধ অথবা স্থগিত করা হবে, সেসব কেন্দ্র বা আসনে এক সপ্তাহের মধ্যে ভোট শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে ইসির। সেটা যেন রমজানে গিয়ে না পড়ে তা নিশ্চিত করতে চায় কমিশন। এ ছাড়া নির্বাচনের গেজেট প্রকাশের পর যে দল সংখ্যাগরিষ্ঠাতা পাবে তাদের সরকার গঠন করতেও সপ্তাহখানেক সময় লাগতে পারে। সেটাও যেন রমজানের আগে সম্ভব হয় সে সুযোগও রাখতে চায় ইসি।
আগামী বছর পবিত্র রমজান মাস শুরু হতে পারে ১৮ বা ১৯ ফেব্রুয়ারি। নির্বাচন কমিশন যদি সপ্তাহখানেক সময় হাতে রাখতে চায় তাহলে ১২ তারিখের মধ্যে ভোট নিতে হবে। এদিকে শবে বরাতের সম্ভাব্য তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি। সরকার অন্তত এর আগে নির্বাচন দেবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাই শবে বরাতের পর থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধের মধ্যেই ভোট দিতে হবে। সেক্ষেত্রে যদি ৫ তারিখ বৃহস্পতিবার শবে বরাতের বন্ধ পড়ে যায় তাহলে এর পরের সপ্তাহের যেকোনো দিন ভোট নিতে হবে।
এর আগে দেশে ১২টি সংসদ নির্বাচন হয়েছে। এসব নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৬ বার, বিএনপি ৪বার ও জাতীয় পার্টি ২ বার জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। আওয়ামী লীগ প্রথম, সপ্তম, নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে; বিএনপি দ্বিতীয়, পঞ্চম, ষষ্ঠ ও অষ্টম সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করে। জাতীয় পার্টি তৃতীয় ও চতুর্থ সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়। সংসদের মেয়াদ পাঁচ বছর হলেও রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ নানা কারণে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, ষষ্ঠ ও দ্বাদশ সংসদ মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেনি। তবে পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম, নবম, দশম ও একাদশ সংসদ তাদের মেয়াদকাল পূরণ করেছে।
বিগত ১২টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্যে ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নবম সংসদ নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছিল। এ নির্বাচনে মোট ৮৭ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছিল। অন্যদিকে, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সবচেয়ে কম ভোট পড়েছিল। ওই নির্বাচনে মাত্র ২৬.৫ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ পেয়েছিল।
এমআর/






