বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৪৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: সেই গৃহকর্মী গ্রেফতার ১২৫ আসনে প্রার্থী ঘোষণা এনসিপির রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সিইসির সাক্ষাৎ আজ, যেকোনো সময় তফসিল ঘোষণা মাদারীপুরে প্রেমিকাকে ভিডিও কলে রেখেই গলায় ফাঁস চিকিৎসকের ঠাকুরগাঁওয়ে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস পালিত আবু সাঈদ হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিতে ট্রাইব্যুনালে হাসনাত আবদুল্লাহ নারী সমাজকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে এসেছিলেন বেগম রোকেয়া পঞ্চগড়ে আরও বাড়লো শীত, তাপমাত্রা ১০.৪ ডিগ্রি আশাশুনিতে পরিবার তন্ত্রে নিয়ন্ত্রিত ডিলার সিন্ডিকেটে জিম্মি কৃষক; ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি! নবাগত পুলিশ সুপারের সাথে ঠাকুরগাঁওয়ে প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের মতবিনিময়

ট্রাম্পের অধিকাংশ শুল্কারোপ অবৈধ : মার্কিন আদালত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক / ১৭৭ Time View
Update : শনিবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফেডারেল আপিল আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জারি করা বেশিরভাগ শুল্ক অবৈধ। এই রায়ের ফলে তার বহুল আলোচিত পররাষ্ট্র ও বাণিজ্যনীতি আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লো। খবর বিবিসির।

 

৭-৪ ভোটে দেওয়া রায়ে আদালত জানায়, ট্রাম্প আন্তর্জাতিক জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা আইন (আইইইপিএ) ব্যবহার করে শুল্ক আরোপ করেছেন। কিন্তু এই আইন প্রেসিডেন্টকে এ ধরনের ক্ষমতা দেয় না। শুল্ক আরোপ কংগ্রেসের সাংবিধানিক এখতিয়ার বলেও রায়ে উল্লেখ করা হয়।

 

নতুন এই রায় কার্যকর হবে আগামী ১৪ অক্টোবর। এর আগে প্রশাসন চাইলে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করতে পারবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, মামলাটি এখন প্রায় নিশ্চিতভাবেই সর্বোচ্চ আদালতে গড়াচ্ছে।

 

বর্তমানে চীন, মেক্সিকো এবং কানাডার মতো বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের ওপরই অন্যায্য শুল্ক আরোপ করে রেখেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

 

তবে ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ট্রাম্প এই রায়ের সমালোচনা করে বলেছেন, যদি বহাল থাকতে দেওয়া হয়, তাহলে এই সিদ্ধান্ত আক্ষরিক অর্থেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ধ্বংস করে দেবে।

 

তিনি লিখেছেন, আজ একটি আপিল আদালত বলেছে আমাদের শুল্ক প্রত্যাহার করা উচিত, কিন্তু তারা জানে যে শেষ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই জিতবে। এই রায় সঠিক নয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।

 

তিনি বলেন, যদি শুল্ক তুলে নেওয়া হয় তবে এটি দেশের জন্য একটি সম্পূর্ণ বিপর্যয় হবে। এটি আমাদের আর্থিকভাবে দুর্বল করে দেবে। কিন্তু আমাদের শক্তিশালী হতে হবে।

 

ট্রাম্প বাণিজ্যের ওপর জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। তিনি যুক্তি দিয়েছেন যে, বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু আদালত রায় দিয়েছে যে, শুল্ক আরোপ করা প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার মধ্যে পড়ে না এবং শুল্ক নির্ধারণ কংগ্রেসের মূল ক্ষমতার অন্তর্ভুক্ত।

 

রায়ে মার্কিন ফেডারেল সার্কিট আপিল আদালত ট্রাম্পের সেই যুক্তি প্রত্যাখ্যান করেছেন, যেখানে তিনি দাবি করেছিলেন জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতার আওতায় শুল্ক আরোপ বৈধ। কিন্তু আদালত স্পষ্ট বলেছে, এই শুল্কগুলো ‘অবৈধ ও আইনের পরিপন্থি’।

 

১২৭ পৃষ্ঠার বিস্তারিত রায়ে বলা হয়, আইইইপিএ কোথাও শুল্ক কিংবা এর কোনো প্রতিশব্দ উল্লেখ করেনি। একইসঙ্গে প্রেসিডেন্টের শুল্ক আরোপের ক্ষমতায় স্পষ্ট সীমা টানার মতো কোনো প্রক্রিয়াগত সুরক্ষাও এতে নেই।

 

তাই আদালতের মতে, কর ও শুল্ক আরোপের ক্ষমতা কংগ্রেসের হাতেই বহাল থাকবে। রায়ে আদালত আরো বলেছে, ১৯৭৭ সালে কংগ্রেস যখন এই আইনটি পাশ করেছিল তখন অতীতের অনুশীলন থেকে সরে এসে প্রেসিডেন্টকে শুল্ক আরোপের সীমাহীন কর্তৃত্ব প্রদানের উদ্দেশ্যে এটি করা হয়েছিল বলে মনে হয় না।

 

আদালত রায়ে লিখেছে, যখনই কংগ্রেস প্রেসিডেন্টকে শুল্ক আরোপের ক্ষমতা দিতে চায়, তখন সেটা স্পষ্টভাবে কখনো ‘ট্যারিফ’ বা ‘ডিউটি’র মতো সুস্পষ্ট শব্দ ব্যবহার করে।

 

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি অঙ্গরাজ্য জোটের দায়ের করা দুইটি মামলার প্রেক্ষিতেই এই রায় দিয়েছে আদালত। ওই মামলাগুলো হয়েছিল গত এপ্রিলে দেওয়া নির্বাহী আদেশের পর। সেই আদেশে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিশ্বের প্রায় সব দেশের ওপর ১০ শতাংশ মূল শুল্ক এবং আরও ডজনখানেক দেশের ওপর পারস্পরিক শুল্ক আরোপ করেছিলেন। এবং ওই দিনটিকে ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন আমেরিকার অন্যায্য বাণিজ্যনীতির হাত থেকে মুক্তির দিন হিসেবে।

 

এরপর মে মাসে নিউইয়র্কভিত্তিক কোর্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড রায় দিয়েছিল, এসব শুল্ক অবৈধ। তবে আপিল প্রক্রিয়া চলার কারণে সেই রায় স্থগিত রাখা হয়। শুক্রবারের রায়ে শুধু বৈশ্বিক শুল্কই নয়, কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের ওপর আরোপিত শুল্কও বাতিল করা হয়েছে। আগে ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, এসব শুল্ক মাদক আমদানি ঠেকাতে খুব জরুরি ছিল।

 

তবে এই সিদ্ধান্ত ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর আরোপিত শুল্কের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। কারণ সেগুলো ভিন্ন ক্ষমতাবলে আরোপ করা হয়েছিল।

 

রায় ঘোষণার আগে হোয়াইট হাউজের আইনজীবীরা যুক্তি দিয়েছিলেন, এসব শুল্ক অবৈধ ঘোষণা করা হলে তা ১৯২৯ সালের মহামন্দার মতো আর্থিক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

 

তারা এক চিঠিতে লিখেছিলেন, আইইইপিএ-এর আওতায় প্রেসিডেন্টের শুল্ক আরোপের ক্ষমতা হঠাৎ বাতিল করা হলে তা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা, বৈদেশিক নীতি ও অর্থনীতির জন্য ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনবে।

 

এমআর/


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর