শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ১২:৫৫ অপরাহ্ন

জোর করে একীভূত করলেই দুর্বল ব্যাংক সবল হয়ে যাবে না : ড. ফরাসউদ্দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক / ৩২ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪

জোর করে কোনো দুর্বল ব্যাংককে অন্য ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করলেই সেই ব্যাংক সবল হয়ে যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন।

তিনি বলেছেন, একীভূত বিষয়টা নতুন না। এটি বিভিন্ন দেশে রয়েছে। তবে এক ব্যাংকের সঙ্গে অন্য ব্যাংককে জোর করে একীভূত করে খারাপ ব্যাংককে ভালো করা যাবে না। একীভূত বা টেকওভার হতে পারে। তবে কোনো কিছুই জোর করা ঠিক হবে না।

বৃহস্পতিবার (২ মে) রাজধানীর ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত ‘কনভারসেশন উইথ ইআরএফ’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

ইআরএফ সম্পাদক আবুল কাশেমের পরিচালনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা। উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর হেড অব অনলাইন শওকত হোসেন, ইআরএফ নেতৃবৃন্দসহ গণমাধ্যম কর্মীরা।

ড. ফরাসউদ্দিন বলেন, ব্যাংক একীভূত নতুন কিছু না। তবে এটাতে জোর করা বা চাপিয়ে দেওয়া ঠিক হবে না। যে দুটি ব্যাংক একীভূত হবে তাদের নিজেদের সম্মতি নেওয়া জরুরি। এ পদ্ধতিতেই সারা পৃথিবীতে হয়। অতীতে বাংলাদেশেও হয়েছে। এটাতে জোর করে না চাপিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে একীভূত করা উচিত।

সাবেক এ গভর্নর বলেন, প্রায় দশ মাস ধরে আমাদের মূল্যস্ফীতি ১০’র কাছাকাছি। মন্ত্রীরা বলছেন ৯ দশমিক ৭ মূল্যস্ফীতির পরও মানুষ ভালো আছেন। বাস্তবতা বিবর্জিত কথা। চাকরিজীবীদের হয়তো কিছুটা বেতন বেড়েছে। তার মানে এই মূল্যস্ফীতিতে তারা ভালো আছেন এটা বলা যাবে না।

তিনি বলেন, বিশ্বের সব দেশে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। অথচ আমরা পারিনি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আমাদের মনিটরিং পদ্ধতি বদলাতে হবে। টিভিতে মনিটরিং না করে সরাসরি তদারকি বাড়াতে হবে। তা না হলে মূল্যস্ফীতি কমানো যাবে না।

ঋণ খেলাপি বিষয়ে ড. ফরাসউদ্দিন বলেন, কৃষককে ৫০০ বা হাজার টাকার ঋণের জন্য জেলে নেবো আর যে ব্যক্তি দশ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার উধাও হয়ে যায় তাকে সালাম দেবো, পাশে বসাবো- এটা হতে পারে না। ঋণ খেলাপিদের ডেকে পাশে বসিয়ে চা আপ্যায়ন করা হয়, এটি বেশি দিন চলতে পারে না।

তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে ঋণ খেলাপি, কর খেলাপি, পাচারকারী একই সূত্রে গাঁথা। এই মুহূর্তে ব্যাংকে আমানত আসা দরকার। আমানতের বিমার হার এক কোটি টাকা করা দরকার। আমানত আসতে যতো বাধা সব দূর করতে হবে। তবেই ঘরের টাকা ব্যাংকে ফিরে আসবে।

তিনি আরও বলেন, এখন বোরো ফসল কাটা শুরু হয়েছে। সরকার আগামী ১৫ দিন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ২০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য সংগ্রহ করলে কৃষকরা বাঁচবে। আবার অসাধুরা যেন কম দামে কৃষকের ফসল না নিতে পারে সেটাও দেখতে হবে। এটা করতে পারলে ফসলের আসল দাম পাবেন কৃষক। পরে এটা সংকট মুহূর্তে উন্মুক্ত করে দিতে পারে সরকার।

বৈষম্য বিষয়ে সাবেক এ গভর্নর বলেন, ধনতান্ত্রিক অর্থনীতি বড় হবার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের দয়ামায়া কমে যায়। এখন সেটাই হচ্ছে। আর এ কারণেই বৈষম্য বেড়েছে। তবে পার্থক্যও কিছুটা রয়েছে। কারণ, ৩০ বছর আগের গরিব আর এখনকার গরিব এক জিনিস নয়, এর মধ্যে পার্থক্য তৈরি হয়েছে। এ কারণে আমাদের বৈষম্যটা আগে কমাতে হবে।

এমআর


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
এক ক্লিকে বিভাগের খবর